নেপালের মতোই ফিলিপিন্সেও সরকারি আমলাদের দুর্নীতি ও তাদের সন্তানদের আড়ম্বরপূর্ণ জীবনযাত্রা ঘিরে ক্ষোভ বাড়ছে। অভিযোগ, সরকারি চুক্তির বরাদ্দে দুর্নীতি করে তারা বিপুল সম্পদের অধিকারী হয়েছেন এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই বিলাসিতাকে তুলে ধরছেন।
সমস্যার সূত্রপাত হয় এ বছরের প্রবল বর্ষণ ও ভয়াবহ বন্যার পর। অস্বাভাবিক রকমের তীব্র বৃষ্টিতে নজিরবিহীন বিপর্যয় নেমে এসেছে ফিলিপিন্সের জনজীবনে। তীব্র বৃষ্টির পর রাস্তাগুলো যেন নদীতে পরিণত হয়েছে। সমস্যায় পড়েছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ। ছড়িয়ে পড়েছে লেপ্টোসপাইরোসিস নামে লিভারের রোগ।
ফিলিপিন্সের মানুষ সরকারের বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ তুলেছে। বর্তমান প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ ‘বংবং’ মার্কোস জুনিয়রের দাবি, গত বছর ৫,৫০০-র বেশি বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প সম্পূর্ণ হয়েছে। কিন্তু তদন্তে জানা যায়, অনেক প্রকল্পই ছিল ‘ঘোস্ট প্রজেক্ট’, যা আসলে কাগজে-কলমে রয়েছে। আবার অনেক প্রকল্প নিম্নমানের, যার বিপুল অর্থ ঠিকাদার ও সরকারি কর্তাদের পকেটে গেছে।
এখান থেকেই বিক্ষোভের শুরু। ম্যানিলাসহ আশপাশের এলাকায় প্রবল বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। ২১ সেপ্টেম্বর বিক্ষোভকারীরা দাঙ্গা দমনে নামা পুলিশের দিকে পাথর ও পেট্রোল বোমা ছোড়ে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ওইদিন অন্তত ৬১,০০০ মানুষ বিক্ষোভে যোগ দেন। এ ঘটনায় ২০০ জনেরও বেশি গ্রেফতার এবং ১০০-র বেশি পুলিশকর্মী আহত হন।
মানুষের অভিযোগ, সরকারি কাজে অনিয়ম হচ্ছে এবং সরকারি কর্তারা অর্থ পকেটে ভরছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাদের সন্তানদের আড়ম্বরপূর্ণ জীবনযাপনের পোস্ট জনরোষ আরও বাড়িয়েছে। প্রেসিডেন্ট মার্কোস দুর্নীতি তদন্তে তিন সদস্যের কমিশন গঠন করেছেন। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা এখন রাজনীতিবিদ ও ঠিকাদারদের সন্তানদের দিকেও ক্ষোভের তির ছুড়ছেন। তাদের ‘নেপো বেবি’ হ্যাশট্যাগ দিয়ে চিহ্নিত করা হচ্ছে।