কাজের দিনে ছুটি নেওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু দুর্গাপুজো তো করতেই হবে। তাই পঞ্জিকা মতে, নির্দিষ্ট তিথি অগ্রাহ্য করে উইকেন্ডে হচ্ছে দুর্গাপুজো। এবারেও বিদেশে থাকা বহু বাঙালি সংগঠকরা দুর্গাপুজো মূল তারিখের আগে বা পরে নিজেদের সুবিধামতো আয়োজন করছেন। মূল নির্ঘণ্ট অনুযায়ী, দুর্গাপুজো শুরু হবে রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) ষষ্ঠী, সোমবার সপ্তমী, অষ্টমী মঙ্গলবার, নবমী বুধবার এবং দশমীতে (২ অক্টোবর, বৃহস্পতিবার) সমাপ্ত হবে। কিন্তু কর্মদিবস হওয়ায় অনেক প্রবাসী সংগঠন সপ্তাহান্তে পুজো করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আয়ারল্যান্ড – ডাবলিনের সুজন দুর্গাপুজো :
ডাবলিনের সবচেয়ে পুরনো দুর্গাপুজো, সুজনের দুর্গাপুজো, ২০১১ সালে শুরু হয়। এ বছর তারা ৩-৫ অক্টোবর পুজো করছে। সভাপতি সৌম্যদীপ্ত দাস জানালেন, “সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে তারিখ এক সপ্তাহ পিছিয়ে নেওয়া হয়েছে। এটা শুধু ধর্মীয় আচার নয়, ভারতীয় সংস্কৃতির প্রাণবন্ত মিলনমেলা।” প্রতি বছর ৫০০-র বেশি ভারতীয় এই পুজোয় যোগ দেন।
আমেরিকা – সাউথ ক্যারোলিনার আলাপন দুর্গাপুজো :
ফোর্ট মিলের আলাপন সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী, ২৫০ পরিবারের উদ্যোগে তাদের দ্বিতীয় দুর্গাপুজো করবে ৩-৫ অক্টোবর। গত বছর থেকেই তারা নারী পুরোহিত মৌমিতা চক্রবর্তীকে দিয়ে পুজো করাচ্ছে। এ বছরও ‘নারীশক্তি ও সমতা’-র বার্তা তারা জারি রেখেছে।
জার্মানি – স্টুটগার্টের মৈত্রী ক্লাব :
মার্সিডিজ ও পোর্শের শহর স্টুটগার্টের মৈত্রী ক্লাব এই সপ্তাহান্তেই দুর্গাপুজো করছে। পঞ্চম বর্ষে পা দেওয়া এই পুজোতে কলকাতার কুমোরটুলির প্রতিমা আনা হয়েছে। ঢাক-ঢোল, আলোকসজ্জা আর ভোগ-প্রসাদ মিলিয়ে ১,২০০-র বেশি মানুষ অংশ নেবেন বলে জানিয়েছেন আয়োজক অমিত চক্রবর্তী।
ব্রাজিল – সাও পাওলো :
লাতিন আমেরিকার সবচেয়ে বড় দুর্গাপুজো হিসেবে পরিচিত সাও পাওলো বারোয়ারি দুর্গাপুজো এবার একদিনেই (রবিবার) সমস্ত আচার সম্পন্ন করবে। সকাল থেকে বোধন দিয়ে শুরু করে সন্ধ্যায় বিসর্জন পর্যন্ত সবকিছু ১২ ঘণ্টার মধ্যে শেষ হবে। সংগঠক অনুজা ভট্টাচার্যের ভাষায়, “এখানকার একমাত্র ও বৃহত্তম দুর্গাপুজো হিসেবে এটি আমাদের প্রবাসী সম্প্রদায়কে এক সুতোয় বেঁধে দেয়।”
যেখানেই হোক, দুর্গাপুজো প্রবাসীদের কাছে শুধু উপাসনা নয়, বরং খাবার, সংস্কৃতি আর একতার প্রতীক। বিশ্বজুড়ে বাঙালিরা তাই নিজের মতো করে মায়ের আগমনীকে স্বাগত জানাচ্ছেন।