দেবীর বোধনের আগেই শোকের ছায়া নেমে এল গোটা গ্রাম জুড়ে। প্রতিমা আনতে গিয়ে এক মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু তিন জনের। দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত আরও তিনজন। তাঁরা বর্তমানে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায় হুগলির পোলবার শংকরবাটি গ্রামের বারোয়ারি পুজো কমিটির সদস্যরা শুক্রবার গভীর রাতে চন্দননগর পটুয়াপাড়া থেকে দুর্গা প্রতিমা আনতে রওনা হন। ঠাকুর আনার জন্য লরি নিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি বারোয়ারি পুজো কমিটির ছয় সদস্য চারচাকার গাড়ি করে রওনা দেন। পটুয়াপাড়া থেকে লরিতে করে প্রতিমা নিয়ে শনিবার মাঝরাতে অন্যান্য সদস্যরা শংকরবাটি গ্রামে পৌঁছে গেলেও চারচাকার গাড়িটি দীর্ঘক্ষণ না এসে পৌঁছানোয় পুজো কমিটির আয়োজকদের সন্দেহ হয়। এরপরই তারা জানতে পারেন যে ওই চারচাকা গাড়িটি দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে এবং তাদের পূজো কমিটির তিন জন ঘটনায় মারা গেছেন ও তিন জন গুরুতর আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
পুজো কমিটির এক সদস্য জানান প্রতিমা পৌঁছে গেলেও ওই চারচাকার গাড়িটি ফিরে না আসায় তারা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে গাড়িতে থাকা এক বন্ধুর ফোনে ফোন করলে অপর প্রান্ত থেকে পুলিশ সেই ফোন ধরে তাদের জানায় যে গাড়িটি দুর্ঘটনায় পড়েছে। এরপরই পুজো কমিটির লোকজন ঘটনাস্থলে যান। ততক্ষণে পুলিশ দুর্ঘটনাগ্রস্ত ওই গাড়িটির ৬জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
পুলিশ সূত্রে জানা যায় চন্দননগর রেল ওভারব্রিজ থেকে নামার সময় পোলবার অনন্তপুরে চার চাকার ওই গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার ধারে সারি দিয়ে রাখা ইটের পাঁজায় সজোরে ধাক্কা মারে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় দুইজনের। আশঙ্কাজনক অবস্থায় বাকি চারজনকে উদ্ধার করে চন্দননগর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা আরও একজনকে মৃত ঘোষণা করেন। পরবর্তীকালে আহতদের অবস্থার অবনতি হওয়ায় দুই জনকে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে ও একজনকে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
মৃতরা হলেন ভাস্কর দেবধারা(২৯), বাড়ি সুগন্ধার শংকরবাটি। মৃত বাকি দুজন প্রীতম চক্রবর্তী(৩০) ও স্বপন দে(৪০)র বাড়ি চন্দননগরের কাঁটাপুকুর এলাকায়।
অন্যদিকে যে ব্যক্তির বাড়ির সামনে ইটের পাঁজা জমা করা ছিল তিনি জানিয়েছেন প্রচন্ড গতিতে ওই চারচাকার গাড়িটি এসে ইটের পাঁজায় ধাক্কা মারে। তবে কী কারণে গাড়িটি দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিল তা খতিয়ে দেখছে পোলবা থানার পুলিশ। গাড়িটি যান্ত্রিক গোলযোগের কারণে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিল নাকি অন্য কোনও কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। সেক্ষেত্রে আহত ব্যক্তিরা সুস্থ হওয়ার পরই দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ জানা যাবে বলে মনে করছে পুলিশ।
অন্যদিকে গোটা শংকরবাটি গ্রাম জুড়ে এখন বিষাদের সুর। পুজোর আগেই মর্মান্তিক ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
Leave a comment
Leave a comment