লাদাখের পূর্ণরাজ্যের দাবিতে আন্দোলনের নেতা পরিবেশকর্মী সোনম ওয়াংচুককে ঘিরে তদন্তে পাকিস্তানের যোগসূত্র সামনে এসেছে। গত বুধবার লেহ-তে হিংসাত্মক সংঘর্ষে চারজনের মৃত্যু ও বহু আহতের ঘটনার পর তাঁকে উস্কানি দেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে। বর্তমানে তাঁর বিরুদ্ধে জাতীয় নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে, যার আওতায় জামিন ছাড়াই দীর্ঘমেয়াদি আটকে রাখা সম্ভব। সূত্রের খবর, তাকে রাজস্থানের যোধপুরের একটি জেলে স্থানান্তর করা হয়েছে।
শনিবার সাংবাদিক বৈঠকে লাদাখ পুলিশের ডিজিপি এস ডি সিং জামওয়াল দাবি করেন, ওয়াংচুক অতীতে পাকিস্তানে গিয়েছিলেন এবং ডন পত্রিকার এক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন। তিনি অভিযোগ করেন, ওয়াংচুক কেন্দ্রের সঙ্গে চলতে থাকা রাজ্যের স্বীকৃতির আলোচনাকে নস্যাৎ করার চেষ্টা করেছেন।
তিনি আরও জানান, সম্প্রতি এক পাকিস্তানি গুপ্তচরকে গ্রেফতার করা হয়েছে, যার সঙ্গে ওয়াংচুকের যোগাযোগ ছিল। “আমাদের কাছে তথ্য আছে, তিনি পাকিস্তানে ডনের এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। বাংলাদেশেও গিয়েছিলেন। তাঁর ওপর বড় প্রশ্নচিহ্ন রয়েছে,” বলেন জামওয়াল।
এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, “আমরা এমন একজনকে পেয়েছি, যে পাকিস্তানে তথ্য পাঠাচ্ছিল। তাকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে।”
হিংসার ঘটনার পর থেকে লেহ-তে কারফিউ জারি রয়েছে এবং ভুল তথ্য ছড়ানো ঠেকাতে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তবে প্রশাসন ধাপে ধাপে কারফিউ শিথিল করার পরিকল্পনা করছে। জামওয়াল জানান, “পুরনো শহর এলাকায় দুপুর ১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত এবং নতুন এলাকায় বিকেল ৩.৩০ থেকে ৫.৩০ পর্যন্ত কারফিউ শিথিল করা হবে।”
জামওয়াল অভিযোগ করেন, ২৪ সেপ্টেম্বরের সহিংস ঘটনায় ওয়াংচুক সরাসরি উস্কানি দিয়েছেন। তিনি বলেন, “ওয়াংচুকের অতীতে জনতাকে উস্কে দেওয়ার ইতিহাস রয়েছে। তিনি আরব বসন্ত, নেপাল ও বাংলাদেশের প্রসঙ্গ তুলেছেন।”
তিনি আরও দাবি করেন, “কিছু তথাকথিত পরিবেশ আন্দোলনকারী এই আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম দখল করার চেষ্টা করেছিলেন। এদের বিশ্বাসযোগ্যতার ওপর প্রশ্ন রয়েছে। এখানে প্রধান নাম সোনম ওয়াংচুক, যিনি আগেও এ ধরনের বক্তব্য দিয়ে আলোচনার প্রক্রিয়া ভেস্তে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন।”
পাশাপাশি, তাঁর বিরুদ্ধে বিদেশি অনুদান আইন (এফসিআরএ) লঙ্ঘনের অভিযোগও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জামওয়াল।