আর্জেন্টিনার মাদক কারবারিদের কুখ্যাতি বিশ্বজুড়ে। এবার সেই মাদক গ্যাং-এর হাতেই নৃশংসভাবে খুন হতে হল বুয়েনস আয়ার্সের তিন তরুণীকে। তাঁদের দেহ গত বুধবার শহরের দক্ষিণ প্রান্তে একটি বাড়ির উঠোনে পুঁতে রাখা অবস্থায় উদ্ধার হয়। নিহতরা হলেন ২০ বছরের দুই কাজিন মোরেনা ভার্দি ও ব্রেন্ডা দেল কাস্তিলো এবং ১৫ বছরের লারা গুতিয়েরেজ। নির্মম এই হত্যাকাণ্ড ঘিরে ওই দেশ জুড়ে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়েছে। তিন তরুণীকে নির্যাতন ও হত্যা সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইভস্ট্রিম করারও অভিযোগ উঠেছে মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে। শনিবার হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে ন্যায়বিচারের দাবিতে সংসদ ভবন পর্যন্ত মিছিল করে।
ইতিমধ্যে এই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত শুরু হয়েছে।পুলিশ জানিয়েছে ১৯ সেপ্টেম্বর তিন তরুণীকে পার্টিতে যাওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে একটি ভ্যানে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। মাদক গ্যাংয়ের পান্ডাদের অভিযোগ ছিল তারা নাকি মাদক চুরি করেছে এবং তাদের ‘শাস্তি’ দেওয়া দরকার। অভিযোগ এই হত্যাকাণ্ড ইনস্টাগ্রামে লাইভ দেখানো হয়েছিল, যা ৪৫ জন প্রাইভেট অ্যাকাউন্ট সদস্য সরাসরি দেখেছিল।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী পরে এক অভিযুক্ত জেরা চলাকালে ভিডিয়োটির কথা জানায়।সেই ভিডিয়োতে গ্যাং নেতাকে বলতে শোনা যায়, “আমার কাছ থেকে যারা মাদক চুরি করে, তাদের এই পরিণতিই হয়।” তবে ইনস্টাগ্রামের মূল সংস্থা মেটা জানিয়েছে, তারা প্ল্যাটফর্মে লাইভস্ট্রিমের কোনও প্রমাণ পাননি এবং তদন্তে কর্তৃপক্ষকে সহায়তা করছে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, খুনিরা খুনের আগে ৩ তরুণীর উপর অত্যাচার চালায়। তাঁদের আঙুল কেটে দেওয়া হয়, নখ তুলে ফেলা হয়। এরপর নির্মমভাবে মারধর ও শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়। এই পর্যন্ত এই ভয়ঙ্কর অপরাধে তিনজন পুরুষ ও দুজন মহিলাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে ষড়যন্ত্রের মূল হোতা হিসেবে চিহ্নিত ২০ বছর বয়সী পেরুর এক বাসিন্দা এখনও পলাতক।
এমন হত্যাকান্ডে ক্ষোভে ফেটে পড়েছে এলাকা সহ দেশের মানুষ। পরিবার ও প্রতিবাদকারীদের দাবি, দোষীদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তি দেওয়া হোক এবং পুরো সত্য জনগণের সামনে প্রকাশ করা হোক।