দিল্লি পুলিশ স্বঘোষিত গডম্যান স্বামী চৈতন্যানন্দ সরস্বতীকে আগ্রা থেকে গ্রেফতার করেছে। তিনি দক্ষিণ দিল্লির বসন্ত কুঞ্জের শ্রী শারদা ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ান ম্যানেজমেন্ট রিসার্চ-এর প্রাক্তন চেয়ারম্যান। সরস্বতী গত আগস্ট মাস থেকে পলাতক ছিলেন, যদিও তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল।
সরস্বতীর বিরুদ্ধে মহিলা ছাত্রীদের ধর্ষণ, আর্থিক অনিয়ম, প্রতারণা সহ মোট ৫টি মামলা রয়েছে। অভিযোগ অনুযায়ী, ১২২ কোটি টাকার ট্রাস্টের সঙ্গে আর্থিক অনিয়মের পাশাপাশি তিনি কলেজের ম্যানেজমেন্ট কোর্সে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমায় ভর্তি হওয়া অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল ছাত্রীদের ওপর শারীরিক ও যৌন হয়রানির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
গত ৫ আগস্ট, শ্রী শৃঙ্গেরী শারদা পীঠের প্রশাসক পি এ মুরলী কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। এফআইআর-এ ২১ বছর বয়সী এক ছাত্রীর বিবৃতি অন্তর্ভুক্ত করা হয়, সঙ্গে ৩২ জন ছাত্রীর কথাও উল্লেখ করা হয়েছে, যারা বারবার যৌন হয়রানির ঘটনার কথা জানিয়েছেন।
ছাত্রীরা জানিয়েছেন, শিক্ষকমণ্ডলী এবং প্রশাসকরা তাদের বাধ্য করতেন সরস্বতীর অনুরোধ পূরণ করতে। ছাত্রীদের অভিযোগ, সরস্বতী হোয়াটসঅ্যাপে অশ্লীল বার্তা পাঠাতেন, শারীরিকভাবে অসহনীয় আচরণ করতেন এবং কুকথা ব্যবহার করতেন। এমনকি নিরাপত্তার অজুহাতে ছাত্রী হস্টেলের ঘরে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগিয়ে নজরদারি চালাতেন।
পুলিশ জানিয়েছে, ৯টি নকল ডিপ্লোম্যাটিক কার নম্বর প্লেট ব্যবহার করার অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। তাঁর ১৮টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ও ২৮টি ফিক্সড ডিপোজিটে ৮ কোটি টাকারও বেশি সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তদন্তের সময় কলেজের একাধিক সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করা হয়েছে এবং ঘটনাস্থল ও সংশ্লিষ্ট ঠিকানায় একাধিকবার তল্লাশি চালানো হয়েছে। ১৬ জন ভুক্তভোগীর বিবৃতি পাতিয়ালা হাউস কোর্ট-এ নথিভুক্ত করা হয়েছে।
দিল্লি পুলিশের ডিসিপি (দক্ষিণ-পশ্চিম) অমিত গোয়েল জানিয়েছেন, পলাতক থাকাকালীন সরস্বতী ধারাবাহিকভাবে অবস্থান পরিবর্তন করছিলেন। পাঁচটির বেশি দল তাঁকে খুঁজে বের করার জন্য কাজ করছিল। শেষ পর্যন্ত শনিবার রাতে আগ্রায় গ্রেফতার করা হয় এবং তাঁকে দিল্লিতে আনা হয়।
সরস্বতী দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন অভিযোগের মধ্যে জড়িত। ২০০৯ সালে তাঁর বিরুদ্ধে প্রথম মামলা দায়ের হয়েছিল। ২০১৬ সালে বসন্ত কুঞ্জে এক ছাত্রীকে ধর্ষণের মামলা হয়েছিল, এবং এই বছরের মধ্যে তিনটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল যৌন হয়রানি, প্রতারণা, জালিয়াতিসহ বিভিন্ন অভিযোগে।