
দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় (জেএনইউ)-তে বিজয়া দশমীর দিন দুই ছাত্র সংগঠনের মধ্যে তীব্র সংঘর্ষ বেঁধে যায়। এবিভিপি অভিযোগ করেছে, বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলো দুর্গা প্রতিমা বিসর্জন শোভাযাত্রায় হামলা চালায়। অন্যদিকে বামগোষ্ঠী পাল্টা অভিযোগ করেছে, এবিভিপি ধর্মকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করেছে ‘রাবণ দহন’ কর্মসূচির মাধ্যমে।জেএনইউ ছাত্র সংসদের যুগ্ম সম্পাদক ও এবিভিপির একমাত্র প্রতিনিধি বৈভব মীনা অভিযোগ করে বলেন, “আজ বিজয়া দশমীতে আমরা ঘোষণা করেছিলাম যে, নকশালপন্থী শক্তির রাবণ দহন করব। নয়দিনের দুর্গাপূজা শেষে বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের সময় শোভাযাত্রা বের হয়। প্রথমে সবরমতীতে হস্টেলে নকশালপন্থী নেতা-নেত্রীর ছবি যেমন আফজল গুরু, উমর খালিদ, শরজিল ইমাম, জি সাই বাবা, চারু মজুমদার প্রমুখের প্রতিকৃতি পুড়িয়ে রাবণ দহন করা হয়।”

এবিভিপির দাবি, এর পরেই এআইএসএ, এসএফআই ও ডিএসএফ-সহ বাম সংগঠনগুলি বিসর্জন শোভাযাত্রায় হামলা চালায়। তারা অভিযোগ করেছে, ইটপাটকেল ছোড়ায় বহু ছাত্র-ছাত্রী আহত হন। বৈভব মীনা এই ঘটনাকে “বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্বের ওপর সরাসরি আঘাত” বলে মন্তব্য করেন।অন্যদিকে জেএনইউ ছাত্র সংসদ ও এআইএসএ অভিযোগ করেছে, এবিভিপি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ধর্মীয় আবেগকে কাজে লাগিয়ে রাজনৈতিক লাভ তুলতে চাইছে।
এআইএসএর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “এটি স্পষ্ট ইসলামোফোবিয়া, যেখানে ধর্মকে কুৎসিতভাবে ব্যবহার করে রাজনৈতিক ফায়দা তোলা হচ্ছে।”সংগঠনটি আরও প্রশ্ন তোলে, কেন এবিভিপি নাথুরাম গডসে, গুরমিত রাম রহিম সিং অথবা ২০২০ দিল্লি দাঙ্গার উস্কানিমূলক বক্তৃতার জন্য অভিযুক্ত নেতাদের ছবি পোড়ালো না।জেএনইউএসইউ সভাপতি নীতীশ কুমার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “এবিভিপি-র সদস্যরা ‘জয় শ্রী রাম’ ও ‘যোগীজির বুলডোজার ন্যায়বিচার’-এর স্লোগান তোলে। এমনকি চপ্পল নাড়িয়ে আমাদের উস্কানি দেওয়ার চেষ্টা করে। আমরা মানবশৃঙ্খল তৈরি করে সহিংসতা ঠেকাই। কিন্তু তারা আধঘণ্টা ধরে পরিস্থিতি উত্তেজিত করতে থাকে।”তিনি আরও বলেন, জেএনইউ ছাত্র সংসদ শুরু থেকেই এবিভিপি-র এই ধরনের ছবি পোড়ানো কর্মসূচির বিরোধিতা করেছে।ঘটনা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে সংঘর্ষের পর ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ছড়িয়েছে এবং উভয় পক্ষ একে অপরকে দায়ী করছে।