
ইলিশের প্রজনন বৃদ্ধি ও উৎপাদন বৃদ্ধি করতে ফের একবার মাছ ধরার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করল পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য মৎস্য দফতর। ২ অক্টোবর থেকে ১২ অক্টোবর পর্যন্ত, মোট ১১ দিনের জন্য, মৎস্যজীবীরা সমুদ্রে মাছ ধরতে পারবেন না। দফতরের তরফে এই সংক্রান্ত নোটিস ইতিমধ্যেই দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার মৎস্য ইউনিয়নগুলিতে এসে পৌঁছেছে।

নতুন করে এই ১১ দিনের ‘ব্যান পিরিয়ড’ শুরু হওয়ায় মৎস্যজীবী মহলে গভীর দুশ্চিন্তা দেখা দিয়েছে। এর আগে গত ১৫ এপ্রিল থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত টানা দু’মাস সমুদ্রে মাছ ধরা বন্ধ ছিল। সেই নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ট্রলারগুলি সমুদ্রে পাড়ি দিলেও, ইলিশের ভরা মরসুমে একের পর এক প্রাকৃতিক দুর্যোগ মৎস্য শিকারের ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করেছে। ফলস্বরূপ, মৎস্যজীবীরা বর্তমানে চরম আর্থিক সংকটের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।এরই মধ্যে মা ইলিশ রক্ষার স্বার্থে নতুন করে এই নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ায়, তাঁরা আরও বড় আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন।

মৎস্যজীবী ইউনিয়নগুলি ইতিমধ্যেই সমস্ত ট্রলার মালিক ও শ্রমিকদের নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি জানিয়ে দিয়েছে। বর্তমানে সুন্দরবনের নামখানা, ফেজারগঞ্জ সহ বিভিন্ন বন্দর ও জেটিঘাটগুলিতে মৎস্যজীবী ট্রলারগুলি সারি সারি দাঁড়িয়ে আছে। তারা এখন অধীর আগ্রহে ১২ অক্টোবর পার হওয়ার অপেক্ষা করছেন।অন্যদিকে, মৎস্য দফতরের আধিকারিকদের একাংশ মনে করছেন যে এই ১১ দিনের নিষেধাজ্ঞার ফলে সমুদ্র এবং নদীতে ইলিশের প্রজননের যথাযথ পরিবেশ রক্ষা করা এবং মা ইলিশ সংরক্ষণ করা সম্ভব হবে। তবে সরকারি নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে কোনও ট্রলার সমুদ্রে বা নদীতে মাছ ধরতে গেলে কঠোর পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গ সরকার সামুদ্রিক মৎস্য শিকার নিয়ন্ত্রণ আইন ও নিয়মাবলি ১৯৯৩, ১৯৯৫ মোতাবেক সেই ট্রলার বাজেয়াপ্ত করার পাশাপাশি ট্রলারের মালিক এবং মৎস্যজীবীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।মৎস্যজীবীদের উদ্বেগ এবং মৎস্য দফতরের আশা, সবমিলিয়ে নতুন করে এই নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা নিয়ে মৎস্যজীবী মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে।
