
মধ্যপ্রদেশে কাফ সিরাপ খেয়েই অন্তত ১১ শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। জানা যাচ্ছে, বহু অসুস্থের মধ্যে আরও ৬ জন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। পরিবারগুলির দাবি, সবই ‘কোল্ডরিফ’ কাফ সিরাপ খাওয়ার ফল। কিন্তু এমন অভিযোগ উঠলেও একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের করা তদন্ত রিপোর্টে উঠে এসেছে, বিস্ময়করভাবে একটি মৃত্যুরও পোস্টমর্টেম হয়নি। তামিলনাড়ু ২৪ ঘণ্টার মধ্যে একই সিরাপ পরীক্ষা করে তাৎক্ষণিকভাবে নিষিদ্ধ করলেও এক্ষেত্রে প্রশাসনিক অদক্ষতা, উদাসীনতা ও দায় এড়ানোর সংস্কৃতি নগ্নভাবে প্রকাশ্যে এসেছে।
মৃত ১১ শিশুর কারও অটোপসি কেন হয়নি তার ব্যাখ্যায় পারাসিয়ার এসডিএম পরিবারগুলো অনুমতি দেয়নি বলে জানালেও প্রশাসনের কেউই কখনও অটোপসির জন্য অনুমতি চাননি বলে অভিযোগ করেছেন ক্ষতিগ্রস্তরা। প্রথম কিডনি ব্যর্থতার ঘটনা ২৪ আগস্টে ধরা পড়ে। ২ সেপ্টেম্বর এক শিশু মারা গেলেও পরবর্তী দুই সপ্তাহে আরও ছয় শিশু মারা যায়। তবে অভিযোগ, কর্তৃপক্ষ তা কাকতালীয় বলে উড়িয়ে দেয়। ২৯ সেপ্টেম্বর ছিন্দওয়াড়া প্রশাসন ‘কোল্ডরিফ’ নিষিদ্ধ করে, সেটিকে ‘বিষাক্ত’ আখ্যা দিলেও সরকারি পরীক্ষার রিপোর্ট আসে ৩ অক্টোবর। পরদিন পুরো রাজ্যে নিষিদ্ধ হয় ওষুধটি।

অন্যদিকে, ১ অক্টোবর মধ্যপ্রদেশের পাঠানো চিঠি হাতে পাওয়ার পর তামিলনাড়ু ওষুধ নিয়ন্ত্রণ দফতর সেদিনই তদন্ত শুরু করে এবং দ্রুত রাজ্যজুড়ে নিষিদ্ধ হয় সিরাপ। সিরাপ কোম্পানি স্রেসান ফার্মাসিউটিক্যালস বন্ধ করে দেওয়া হয়। অথচ মধ্যপ্রদেশে ডেপুটি ড্রাগ কন্ট্রোলার শোভিত কোস্তা ১ অক্টোবর তীর্থযাত্রায় বের হন, আর ভোপালের ল্যাব কর্মীরা ছিলেন উৎসবের ছুটিতে। অর্থাৎ সংবাদ মাধ্যমের তদন্তে উঠে আসছে, যখন তামিলনাড়ু সরকার সক্রিয় তখন ঘুমিয়েই ছিল মধ্যপ্রদেশ সরকার।

তামিলনাড়ুর রিপোর্ট হাতে আসার পর অবশেষে ৪ অক্টোবর মধ্যপ্রদেশ ফুড অ্যান্ড ড্রাগস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কোল্ডরিফ সহ কোম্পানির সব ওষুধ নিষিদ্ধ করে। মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মোহন যাদব পরে শিশুদের মৃত্যু ভীষণ করুণ, রিপোর্ট হাতে আসার পরই কঠোর পদক্ষেপ করা হয়েছে বলে জানালেও সংবাদ মাধ্যমের অনুসন্ধান বলছে, সরকারি হিসেব মৃত্যু কম দেখানো হয়েছে। আসলে অন্তত ১২ শিশু মারা গেছে, যার তিনটির কোনও রেকর্ডই প্রশাসনের কাছে নেই।