
রাজস্থান-এর জয়পুরে রাজ্য পরিচালিত সাওয়াই মান সিং হাসপাতালের ট্রমা সেন্টারে ভয়াবহ আগুন। এই অগ্নিকাণ্ডে ৮ জন গুরুতর অসুস্থ রোগীর মৃত্যু হয়েছে। রবিবার গভীর রাতে এই দুর্ঘটনা ঘটে। এই তথ্য জানানো হয়েছে হাসপাতাল ও প্রশাসনের তরফে।
ট্রমা সেন্টারের ইনচার্জ ডাঃ অনুরাগ ঢাকড় জানান, আগুন লাগার সময় নিউরো আইসিইউ-তে মোট ১১ জন রোগীর চিকিৎসা চলছিল। স্টোররুম সংলগ্ন স্থানে আগুনের সূত্রপাত হয় বলে জানা গেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, শর্ট সার্কিট থেকেই এই আগুন লাগে। আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে গোটা হাসপাতাল চত্বরে রীতিমতো হইচই পড়ে যায়। ধোঁয়া দ্রুত পুরো ফ্লোর জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে রোগী ও তাঁদের পরিবারের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
স্টোররুমে রাখা বিভিন্ন নথি, আইসিইউ-র যন্ত্রপাতি, রক্তের নমুনা টিউব ও অন্যান্য সামগ্রী সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। আগুনের খবর পেয়ে হাসপাতালের কর্মী ও রোগীর পরিবারের সদস্যরা মিলে রোগীদের সরিয়ে বাইরে নিয়ে আসেন। এমনকি অনেককেই বিছানা সহ হাসপাতাল ভবনের বাইরে নিয়ে আসা হয়।
দমকল বিভাগে খবর দেওয়ার কিছুক্ষণ পরই দমকল কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় এবং প্রায় দু’ঘণ্টার মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত ওয়ার্ড বয় বিকাশ সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে জানান, “আমরা অপারেশন থিয়েটারের ভিতরে ছিলাম। আগুনের খবর পাওয়া মাত্রই ছুটে যাই। আমরা তিন থেকে চারজন রোগীকে বাঁচাতে পেরেছি। কিন্তু আগুন তীব্র হয়ে ওঠায় আর ভিতরে ঢোকা সম্ভব হয়নি। যতটা পারা গেছে, আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করেছি।”
তিনি আরও জানান, পুলিশ পরে ঘটনাস্থলে আসে, কিন্তু ধোঁয়া অতিরিক্ত ঘন হওয়ায় তৎক্ষণাৎ ভিতরে ঢোকা সম্ভব হয়নি। দমকল কর্মীরা এসে দেখেন পুরো ওয়ার্ড ঘন ধোঁয়ায় ভরে গেছে। আগুন নেভানোর জন্য ভবনের বিপরীত দিকের একটি জানলা ভেঙে ভিতরে ঢুকে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করা হয়। ঘটনার পর মুখ্যমন্ত্রী ভজনলাল শর্মা, সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রী জোগারাম পটেল এবং গৃহ প্রতিমন্ত্রী জওহর সিং বেধম ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতির খোঁজখবর নেন।
তবে যখন সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রী জোগারাম প্যাটেল এবং গৃহ প্রতিমন্ত্রী জওহর সিং বেধম ট্রমা সেন্টারে পৌঁছন, তখন দুজন রোগীর পরিবারের সদস্যরা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাঁদের অভিযোগ, “আমরা ধোঁয়া দেখতে পেয়েই কর্মীদের জানিয়েছিলাম, কিন্তু তারা গুরুত্ব দেয়নি। আগুন লাগার পর কর্মীরাই প্রথমে পালিয়ে যায়। এখন আমরা আমাদের রোগীর সম্পর্কে কিছুই জানতে পারছি না”।
অভিযোগ উঠেছে, আগুন লাগার সময় হাসপাতালের কর্মীরা সতর্কবার্তা উপেক্ষা করেছিলেন এবং পরে রোগীদের অবস্থা সম্পর্কেও কোনও তথ্য দিতে পারেননি।
