
বিষাক্ত কাশির সিরাপ সেবনের ফলে একাধিক শিশুমৃত্যুর ঘটনায় উদ্বেগ ছড়িয়েছে দেশজুড়ে। এরই প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে দায়ের করা হয়েছে একটি জনস্বার্থ মামলা, যাতে এই মৃত্যুগুলির তদন্তে সর্বোচ্চ আদালতের হস্তক্ষেপ ও বিচারবিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ চাওয়া হয়েছে।
আবেদনে বলা হয়েছে, বাজারে বিক্রি হওয়া সমস্ত কাশির ওষুধের মান নিয়ন্ত্রণ বাধ্যতামূলক করা হোক। একই সঙ্গে যে সব দূষিত সিরাপ এখনও বাজারে ঘুরছে, সেগুলি অবিলম্বে বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেওয়া হোক। মামলাকারী আদালতের কাছে আবেদন জানিয়েছেন, একটি জাতীয় বিচার কমিশন বা বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে গোটা ঘটনার উপর নজরদারি করা হোক।
তাঁর আরও দাবি, এই ঘটনায় যেসব রাজ্যে এফআইআর দায়ের হয়েছে, সেগুলিকে একত্রিত করে সিবিআই-এর হাতে তদন্তভার দেওয়া হোক, যাতে একটি স্বচ্ছ ও একক তদন্ত সম্ভব হয়।
সম্প্রতি মধ্যপ্রদেশের ছিন্দওয়াড়ায় কাশির ওষুধ খেয়ে ১১ জন শিশুর মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ ওঠে। পরে তদন্তে দেখা যায়, কোল্ডরিফ সিরাপ নামের একটি কাশির ওষুধ খাওয়ার পরই এই মৃত্যুগুলি ঘটে। ওষুধটি উৎপাদন করেছিল শ্রেসান ফার্মাসিউটিক্যালস নামের একটি সংস্থা। পরীক্ষায় ওই সিরাপে প্রাণঘাতী রাসায়নিক উপাদান ডাইইথিলিন গ্লাইকল পাওয়া যায়, যা শরীরে গেলে কিডনি বিকল হয়ে মৃত্যুর কারণ হতে পারে।
ঘটনার পর থেকেই রাজ্য সরকার ও কেন্দ্রীয় ঔষধ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা (ডিসিজিআই) তদন্ত শুরু করে। ইতিমধ্যেই চিকিৎসক প্রবীণ সোনিকে গ্রেফতার ও ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থার মালিকদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছে।
এদিকে, সোমবার মধ্যপ্রদেশ সরকার ‘রিলাইফ’ ও ‘রেসপিফ্রেশ টিআর’ নামে আরও দুটি কাশির সিরাপ বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। পরীক্ষায় এই দুই সিরাপেও বিষাক্ত উপাদান পাওয়া গেছে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, সাম্প্রতিক ঘটনাগুলি দেশের ওষুধ উৎপাদন ও মান নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার ভয়াবহ ঘাটতির ইঙ্গিত দিচ্ছে। সুপ্রিম কোর্টে দায়ের হওয়া এই জনস্বার্থ মামলাটি তাই এখন জাতীয় পর্যায়ে নজর কাড়ছে।