
সন্দীপন বিশ্বাস
সকাল থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছিল, সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেতে চলেছেন ভারতীয় সাহিত্যিক অমিতাভ ঘোষ। বাঙালি এবং বাংলা নিউজ পোর্টালগুলো তাই নিয়ে লেখালেখিও শুরু করে দিয়েছিল। সকলেই আশায় বুক বাঁধছিলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পর আর এক বাঙালি সাহিত্যিক অমিতাভ ঘোষ নোবেল পেতে চলেছেন। যদিও তিনি বাংলায় কিছু লেখেন না। তবু বাঙালি তো! কিন্তু সেই প্রত্যাশা দীর্ঘক্ষণ স্থায়ী হয়নি।
সন্ধ্যার কিছু আগে নোবেল কমিটির ঘোষণা সেই প্রত্যাশায় জল ঢেলে দিল। নোবেল জয়ী হিসাবে নাম ঘোষণা করা হল হাঙ্গেরির সাহিত্যিক লাজলো ক্রাজনোহোরকাইয়ের। দশ বছর আগে তিনি জয় করেছিলেন ম্যান বুকার পুরস্কার। লাজলো তাই বিশ্ব সাহিত্যের অঙ্গনে নতুন নন। তাঁর উপন্যাস, ছোটগল্প বিশ্বে বহুপঠিত। তাঁর কাহিনি নিয়ে হয়েছে চলচ্চিত্রও।

মূলত উত্তর আধুনিকতাবাদের প্রবক্তা তিনি। জীবনকে দেখেছেন ধূসর কাচের মধ্য দিয়ে। সমাজ ও মানুষের ভিতরের কীটগুলোকে তিনি যেন তাঁর অন্তর্দৃষ্টি দিয়ে দেখতে পান। তাঁর ‘সাটানট্যাঙ্গো’ বইটি বিদগ্ধ পাঠকের কাছে আদৃত। হাঙ্গেরির একটি গ্রামের ঘটনাকে কেন্দ্র করে উপন্যাসটি গড়ে উঠেছে। ইরামিয়াস নামক চরিত্রটি যেন এক নতুন দিগন্তকে উন্মোচিত করে। মহাকাব্যিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছে উপন্যাসটি। সাটানট্যাঙ্গো আসলে এক ধরনের নৃত্য। সে যেন হয়ে ওঠে মৃত্যুর এক ধূসর নৃত্য। কোনও কোনও সমালোচক এই উপন্যাসটিকে বলেছেন, সম্মোহিত করার মতো একটি লেখা।
তাঁর অন্য উপন্যাস ‘দি মেলানকোলি অব রেজিস্ট্যান্স’ প্রকাশিত হয় ১৯৮৯ সালে। এই বইটিকে বলা হয় রাজনৈতিক আঙ্গিকে লেখা একটি রূপক উপন্যাস।
খুব বেশি উপন্যাস তিনি লেখেননি। উপন্যাসের পাশাপাশি লিখেছেন ছোটগল্পও। লিখেছেন চিত্রনাট্যও।

এখন লাজলা বাস করেন সেন্টলাসলো পাহাড়ের এক নির্জন স্থানে। এমনই পোস্টমডার্ন বিষণ্ণতার ইন্ধন রয়েছে তাঁর লেখায়। এই বিষণ্ণতাই তাঁর লেখার প্রসাদগুণ।