
বিহার বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি) নেতা ও প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব বৃহস্পতিবার এক বড় নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ঘোষণা করেছেন। তিনি বলেছেন, যদি তাঁর দল ক্ষমতায় আসে, তবে রাজ্যের প্রতিটি পরিবারে অন্তত একজনকে সরকারি চাকরি দেওয়া হবে।
তেজস্বী যাদব পাটনায় আয়োজিত এক নির্বাচনী সভায় বলেন, “আমাদের সরকার গঠনের পর প্রথম কাজ হবে— প্রতিটি পরিবারে অন্তত একজন সদস্য যেন সরকারি চাকরিতে থাকে, তা নিশ্চিত করা। আমরা এমন একটি আইন আনব, যাতে কোনও ঘরে কেউ বেকার না থাকে।” তিনি দাবি করেন, আরজেডি সরকারে এলে এই বিষয়ে বিধানসভায় বিল পাস করে ২০ দিনের মধ্যেই একটি আইনি কাঠামো তৈরি করবে।
আরজেডি নেতার এই প্রতিশ্রুতি রাজ্যের যুব ভোটারদের উদ্দেশ্যেই মূলত দেওয়া হয়েছে বলে রাজনৈতিক মহল মনে করছে। বিহারে বর্তমানে বেকারত্বের হার দেশের গড়ের চেয়ে বেশি, যা প্রতিবার নির্বাচনে বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়ায়। তেজস্বী যাদব বলেন, “নীতীশ কুমারের সরকার গত ২০ বছরেও বিহারের তরুণদের জন্য পর্যাপ্ত কর্মসংস্থান তৈরি করতে পারেনি। এবার সময় এসেছে প্রতিটি পরিবারে স্থায়ী রোজগারের নিশ্চয়তা দেওয়ার।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, রাজ্যের বর্তমান জোট সরকার শুধুমাত্র রাজনৈতিক সমীকরণে ব্যস্ত থেকেছে, জনগণের সমস্যা সমাধানে নয়। তেজস্বী বলেন, “আমরা জনগণের সরকার গড়ব, আমলাতন্ত্র নয়। আমাদের লক্ষ্য শিক্ষিত যুবকদের যোগ্য মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়া।”
তেজস্বীর এই ঘোষণা আরজেডি শিবিরে নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছে। দলের নেতারা বলছেন, এটি হবে বিহারের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় সামাজিক নিরাপত্তা প্রকল্প। অন্যদিকে, বিজেপি ও জেডিইউ নেতারা এই প্রতিশ্রুতিকে “অবাস্তব ও জনমোহিনী” বলে আখ্যা দিয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য, রাজ্যের আর্থিক পরিস্থিতি এমন নয় যে, প্রতিটি পরিবারকে সরকারি চাকরি দেওয়া সম্ভব হবে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ২০২০ সালের নির্বাচনের সময় তেজস্বী যাদব ১০ লাখ চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, যা নিয়েছি সময় ব্যাপক চর্চা হত। এবারের প্রতিশ্রুতি আরও বড় এবং সরাসরি “প্রতি পরিবারে একটি চাকরি”— যা বিহারের নির্বাচনী সমীকরণে নতুন মাত্রা আনতে পারে।
বিহার নির্বাচন দুই দফায় অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৬ ও ১১ নভেম্বর। ফল ঘোষণা হবে ১৪ নভেম্বর। এখন দেখার বিষয়, তেজস্বী যাদবের এই প্রতিশ্রুতি কতটা বাস্তবায়নযোগ্য এবং তা কতটা প্রভাব ফেলবে রাজ্যের ভোটারদের মনে।