
আর তর সইছেনা, নোবেল চাই-ই চাই। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও নিজেকে “শান্তির প্রেসিডেন্ট” হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন এবং দাবি করেছেন, তাঁর সময়েই আমেরিকা সবচেয়ে কম যুদ্ধে জড়িয়েছে। একইসঙ্গে তিনি সন্দেহ প্রকাশ করেছেন যে, নোবেল কমিটি হয়তো কোনও না কোনও অজুহাতে তাঁকে নোবেল শান্তি পুরস্কার দিতে চাইবে না।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, তাঁর সরকারের সময়ে একাধিক যুদ্ধ বন্ধ হয়েছিল এবং আন্তর্জাতিক মঞ্চে আমেরিকার ভূমিকা ছিল “অসাধারণভাবে শান্তিপূর্ণ।” তিনি মন্তব্য করেন, “আমার কোনও ধারণা নেই ওরা আমাকে পুরস্কার দেবে কি না। কিন্তু আমরা সাতটি যুদ্ধ শেষ করেছি, আর অষ্টমটি শেষ করার পথে ছিলাম। রাশিয়া ইস্যুটাও আমরা শান্তভাবে মেটাতে পারতাম।”
ট্রাম্পের এই মন্তব্য এমন সময়ে এসেছে যখন তাঁর দল আসন্ন নির্বাচনের আগে তাঁকে ‘The Peace President’ বা ‘শান্তির প্রেসিডেন্ট’ হিসেবে প্রচার করছে। তাঁর দল সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে একটি পোস্টার প্রকাশ করেছে, যেখানে ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের যোগ্য প্রার্থী হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে।
পাকিস্তান সম্প্রতি ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দিয়েছে। ইসলামাবাদের দাবি, ২০১৯ সালে ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে উত্তেজনার সময় ট্রাম্পের কূটনৈতিক হস্তক্ষেপ সংঘাত প্রশমনে ভূমিকা রেখেছিল। তবে নয়াদিল্লি এই দাবিকে গুরুত্ব দেয়নি। ভারতের মতে, সীমান্তে শান্তি প্রতিষ্ঠায় একাধিক প্রক্রিয়া কাজ করেছিল, যা কোনও একক রাষ্ট্রনেতার (পড়ুন ট্রাম্পের) কৃতিত্ব নয়।
ট্রাম্প অতীতেও প্রশ্ন তুলেছেন কেন তাঁর পূর্বসূরি বারাক ওবামা প্রেসিডেন্ট হওয়ার প্রথম বছরেই নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়েছিলেন, অথচ তিনি নিজে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কূটনৈতিক সাফল্য অর্জন করেও তা পাননি। তাঁর বক্তব্য, “আমি এমন কাজ করেছি যা অন্য কেউ করেনি, তবু তারা সবসময় এমন কোনও কারণ খুঁজে পায় যাতে আমাকে বাদ দেওয়া যায়।”
বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের এই বক্তব্য মূলত তাঁর নির্বাচনী প্রচারের অংশ, যেখানে তিনি নিজেকে এক শান্তিপ্রিয় ও কূটনৈতিকভাবে দক্ষ নেতা হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছেন। যদিও পর্যবেক্ষকদের মতে, তাঁর প্রশাসনের সময়ে ইরান, উত্তর কোরিয়া ও আফগানিস্তানের মতো অঞ্চলে নীতিগত পরিবর্তন এলেও বিশ্বশান্তির কোনো স্থায়ী ভিত্তি তৈরি হয়নি।
নোবেল শান্তি পুরস্কার নিয়ে ট্রাম্পের আত্মবিশ্বাস যতই প্রবল হোক না কেন, আন্তর্জাতিক মহলে তাঁর সম্ভাবনা নিয়ে সংশয় রয়ে গিয়েছে। অনেকের মতে, এই দাবি তাঁর রাজনৈতিক প্রচারের হাতিয়ার। তবুও “শান্তির প্রেসিডেন্ট” পরিচয়ে তাঁর নতুন প্রচেষ্টা আগামী মার্কিন নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে একটি নতুন রাজনৈতিক বার্তা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
