
জম্মু-কাশ্মীরের আনন্দনগর জেলার কোকেরনাগের গাডোল বনাঞ্চল থেকে শনিবার উদ্ধার করা হলো দুই ভারতীয় সেনার মরদেহ। এর ফলে পাঁচ দিন ধরে চলা সেনা-সদস্যদের সন্ধান অভিযান সমাপ্ত হয় এদিন। সেনা জানিয়েছে, ৬ অক্টোবর রাত থেকে ৭ই অক্টোবর ভোর পর্যন্ত কিশ্তওয়ার রেঞ্জে অভিযান চলাকালীন তুষারঝড়ে জঙ্গি দমনে উদ্দেশ্যে অভিযান চালাতে গিয়ে দুই সেনা নিখোঁজ হয়েছিলেন।
এরপর সেনারা উদ্ধার অভিযান চালায়, যেখানে ড্রোন, হেলিকপ্টার ও অন্যান্য আধুনিক যন্ত্র ব্যবহার করা হলেও চরম আবহাওয়ার কারণে কাজটি কঠিন হয়ে পড়ে। সেনা সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার প্রথম সেনার মরদেহ উদ্ধার করা হয়, আর শনিবার দ্বিতীয় সেনার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত সেনাদের পরিচয় হলো ল্যান্স হাবিলদার পলাশ ঘোষ এবং ল্যান্স নায়ক সুজয় ঘোষ। তাঁরা কিশ্তওয়ার রেঞ্জে কঠিন আবহাওয়ার মধ্যে সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছিলেন।
শ্রীনগরে অবস্থিত চিনার কর্পস জানিয়েছে, এই সাহসী সেনাদের ত্যাগকে চিরকাল মনে রাখবেন। কর্পসের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “তাদের সাহস ও ত্যাগ আমাদের চিরকাল অনুপ্রাণিত করবে। চিনার যোদ্ধারা এই মহান সাহসিকতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাচ্ছে। আমরা নিহত সেনাদের পরিবারের পাশে রয়েছি এবং তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ”।
এদিকে, জম্মু ও কাশ্মীরের লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহা শ্রীনগরে একটি অনুষ্ঠানে ল্যান্স হাবিলদার পলাশ ঘোষ এবং ল্যান্স নায়ক সুজয় ঘোষকে শ্রদ্ধা জানান। তিনি বলেন, “আমাদের সেনা সাহসীদের সর্বোচ্চ ত্যাগের প্রতি আমি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। জাতি চিরকাল তাদের সাহসিকতা ও নিঃস্বার্থ সেবার কৃতজ্ঞ থাকবে। আমরা এই শোকের সময় নিহত সেনাদের পরিবারের পাশে আছি।”
উল্লেখ্য, ৯ অক্টোবর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ নিরাপত্তা বাহিনীকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, “সন্ত্রাসীরা তুষারঝড় ও খারাপ আবহাওয়ার সুযোগ নিয়ে সীমান্ত পার হয়ে প্রবেশের চেষ্টা করতে পারে। তাই সীমান্ত এলাকায় নজরদারি আরও কঠোর করতে হবে।”
মন্ত্রীর নির্দেশে সেনা, বিএসএফ ও কাশ্মীর পুলিশকে সীমান্তবর্তী এলাকায় উপস্থিতি বাড়াতে এবং গোয়েন্দা তথ্য ভাগাভাগি আরও কার্যকর করতে বলা হয়েছে। শীত আসার সঙ্গে সঙ্গে উত্তর কাশ্মীর ও পির পাঞ্জাল পর্বতমালায় ভারি তুষারপাতের সম্ভাবনা রয়েছে, যা নজরদারি ও সীমান্ত নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে।