
ভারত-মার্কিন সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করতে আমেরিকার নবনিযুক্ত মনোনীত রাষ্ট্রদূত সেরজিও গোর ভারতে এসেছেন। সফরের অংশ হিসেবে তিনি শুক্রবার ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস. জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠক করেন।
বৈঠকে উভয় পক্ষই কৌশলগত সহযোগিতা, বাণিজ্যিক অংশীদারিত্ব, প্রযুক্তিগত বিনিয়োগ এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা করেন।
বৈঠকের পর সামাজিক মাধ্যমে বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর লেখেন, “রাষ্ট্রদূত-মনোনীত সেরজিও গোরের সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। ভারত-মার্কিন সম্পর্ক এবং তার আন্তর্জাতিক প্রভাব নিয়ে আমরা বিস্তারিত মতবিনিময় করেছি। নতুন দায়িত্বের জন্য তাঁকে শুভেচ্ছা জানাই।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র বর্তমানে একে অপরের কৌশলগত ও প্রযুক্তিগত অংশীদার হিসেবে বিশ্ব রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
ভারতের বিদেশ সচিব বিক্রম মিশ্রিও গোরের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রনধীর জয়সওয়াল বলেন, “দুই দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা, বাণিজ্য, শিক্ষা এবং প্রযুক্তি ক্ষেত্রে সহযোগিতা আরও বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ভারত-আমেরিকা সার্বিক অংশীদারিত্ব আজ ঐতিহাসিক উচ্চতায় পৌঁছেছে।”
সেরজিও গোর জানান, যুক্তরাষ্ট্র ভারতের সঙ্গে সম্পর্ককে শুধু কূটনৈতিক নয়, বরং আন্তর্জাতিক কৌশলগত ভারসাম্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে দেখে।
তিনি বলেন, “ভারত আজ শুধু একটি আঞ্চলিক শক্তি নয়, বরং আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতার অন্যতম প্রধান স্তম্ভ। বাণিজ্য ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে আমাদের সম্পর্ক ভবিষ্যতে আরও প্রসারিত হবে।”
সেরজিও গোরের এই সফর এমন এক সময়ে হচ্ছে, যখন ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ট্রাম্পের চাপানো শুল্কনীতি নিয়ে প্রতিরোধের পাশাপাশি উভয় দেশে প্রতিরক্ষা উৎপাদন, সেমিকন্ডাক্টর বিনিয়োগ, নবীকরণযোগ্য জ্বালানি, এবং প্রযুক্তি স্থানান্তর নিয়ে একাধিক যৌথ প্রকল্প চলছে।
এর আগে সেপ্টেম্বরে রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে গোর ও জয়শঙ্করের দেখা হয়েছিল, যেখানে তাঁরা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অগ্রগতি নিয়ে কথা বলেন।
গোরের এই সফরকে কূটনৈতিক মহল দেখছে ওয়াশিংটনের ‘ইন্দো–প্যাসিফিক কৌশল’-এর একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে। বিশ্লেষকরা বলছেন, তাঁর এই সফর ভারত-মার্কিন অংশীদারিত্বকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেবে।