
বিহারের ধোরাইয়া ব্লকের একটি গ্রামে পাঁচজন জীবিত বাসিন্দাকে ভোটার তালিকায় মৃত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। নির্বাচনের মুখে এমন ঘটনায় সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে তীব্র বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, মৃত হিসেবে চিহ্নিত পাঁচজন হলেন— মোহন সাহু, সঞ্জয় যাদব, রামরূপ যাদব, নরেন্দ্র কুমার দাস ও বিষ্ণু প্রসাদ। তাঁরা সকলেই ধোরাইয়া ব্লকের ২১৬ নং বুথের নথিভুক্ত ভোটার।
পাঁচজন ভোটার শুক্রবার বিডিও অরবিন্দ কুমারের কাছে একটি স্মারকলিপি জমা দেন। স্মারকলিপিতে তাঁরা লিখেছেন, “স্যার, আমরা বেঁচে আছি। ভোটার তালিকায় আমাদের নাম মৃত হিসেবে ভুলভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আমাদের ভোটাধিকার রক্ষা করুন।”
ঘটনার খবর পাওয়ার পর বিডিও অরবিন্দ কুমার দ্রুত পদক্ষেপ নেন। তিনি বুথ লেভেল অফিসার (BLO)-কে নির্দেশ দেন, ফর্ম-৬ পূরণ করে মৃত হিসেবে চিহ্নিত হওয়া ভোটারদের নাম পুনরায় ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার জন্য।
বিহারের অন্যান্য অঞ্চলেও এমন ভুলভ্রান্তি নজরে এসেছে। উদাহরণস্বরূপ, চম্পারণ জেলার ডুমরি গ্রামে এখনও ১৫ জন মৃত ব্যক্তি ভোটার তালিকায় রয়েছেন।
২০১৮ সালে মৃত্যু হওয়া সোনিয়া শরণ এবং ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে মৃত তাঁর পুত্র মনিত মণিও ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।
এই ভুলভ্রান্তি ভোটার তালিকা “শুদ্ধ” করার জন্য চালানো বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) প্রক্রিয়ার পরেও ঘটছে। এই প্রক্রিয়ায় বিহারে ৩.৬৬ লাখ ভোটারের নাম বাদ দেওয়া হয়েছিল, যার মধ্যে অনেকের নাম ভুলভাবে বাদ পড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
নির্বাচনী বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন ঘটনা নির্বাচনের স্বচ্ছতা ও নাগরিকদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার জন্য হুমকি হিসেবে দেখা দিতে পারে। তারা মনে করেন, নির্বাচন কমিশনকে আরও সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে এবং ভোটার তালিকা পুনর্মূল্যায়ন ও সংশোধন নিশ্চিত করতে হবে।
স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন, “আমাদের নাম মৃত হিসেবে ভুলভাবে দেখানো হয়েছে। নির্বাচনের সময় ভোটাররা তাঁদের অধিকার হারাচ্ছে, যা সম্পূর্ণভাবে অবিচার।”
নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যেই বিষয়টি খতিয়ে দেখছে এবং প্রয়োজনীয় সংশোধনী প্রক্রিয়া শুরু করেছে।