
পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সীমান্ত এলাকায় নতুন করে তীব্র সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়েছে। পাক সেনাবাহিনী দাবি করেছে, গত দুদিনের লড়াইয়ে অন্তত ২০০-র বেশি তালিবান যোদ্ধা নিহত হয়েছে।
সীমান্তের আফগানদের দিক থেকে ছোঁড়া মর্টার ও ভারী অস্ত্রের গোলাগুলির জবাবে পাকিস্তানের সেনারা পাল্টা অভিযান চালায় বলে জানানো হয়েছে। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “আফগান সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলি পাকিস্তানের সীমান্ত ঘাঁটিগুলি দখলের চেষ্টা করলে এই সংঘর্ষ শুরু হয়।”
আফগান সরকারের মুখপাত্র জবিহুল্লাহ মুজাহিদ বলেছেন, “পাকিস্তানের সেনারা সীমান্ত ও আকাশসীমা লঙ্ঘন করায় আফগান বাহিনী প্রতিক্রিয়া জানায়। তিনি দাবি করেন, আফগান সেনারা নিজেদের ভূখণ্ডের সুরক্ষায় পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছে।”
আফগানিস্তানের তালিবান প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তা অভিযোগ করেছেন, পাকিস্তান হেলিকপ্টার ও ড্রোন ব্যবহার করে সীমান্ত এলাকায় হামলা চালিয়েছে।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে তাদের ২৩ জন সৈন্য নিহতের খবর নিশ্চিত করা হয়েছে। পাল্টা আক্রমণে ২০০-র বেশি তালিবান যোদ্ধা নিহত বলেও দাবি করা হয়েছে। অন্যদিকে, আফগানিস্তানের তরফে বলা হয়েছে, তাদেরও কয়েকজন সদস্য প্রাণ হারিয়েছেন।
উভয় দেশের সীমান্তের বেশ কয়েকটি এলাকায় এখনো গুলিবিনিময় চলছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
এই ঘটনার পর পাকিস্তান টোরখাম ও চামওয়ান সীমান্ত সাময়িকভাবে সিল করে দিয়েছে। ওই দুই সীমান্ত পথে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও নাগরিকদের যাতায়াত কার্যত বন্ধ হয়ে পড়েছে।
গত কয়েক বছর ধরে পাকিস্তান অভিযোগ করে আসছে যে, আফগান মাটিতে সক্রিয় পাকিস্তানি তালিবান গোষ্ঠী টিটিপি, বারবার পাকিস্তান সীমান্ত ও ভূখণ্ডে অনুপ্রবেশ ও বিমান হামলার মাধ্যমে উত্তেজনা বাড়িয়ে তুলছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই সংঘর্ষ দুই দেশের দীর্ঘদিনের অবিশ্বাস ও নিরাপত্তা উদ্বেগেরই বহিঃপ্রকাশ, যা দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে।