
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রবিবার ইজরায়েল ও মিশর সফরে রওনা হয়েছেন। যাত্রার আগে তিনি এই সফরকে আখ্যা দেন “খুব বিশেষ মুহূর্ত” হিসেবে এবং ঘোষণা করেন যে, গাজা যুদ্ধ শেষ হয়েছে — যা তিনি দাবি করেছেন একটি “ঐতিহাসিক যুদ্ধবিরতি ও বন্দীমুক্তি চুক্তির” ফলাফল।
ট্রাম্প বলেন, “এটি একটি অত্যন্ত বিশেষ সময় হতে যাচ্ছে। সবাই এই মুহূর্ত নিয়ে উচ্ছ্বসিত।” তিনি এ কথা বলেন মেরিল্যান্ডের জয়েন্ট বেস অ্যান্ড্রুজ থেকে এয়ার ফোর্স ওয়ান বিমানে ওঠার আগে।
এয়ার ফোর্স ওয়ানে ট্রাম্পের সঙ্গে রয়েছেন বিদেশমন্ত্রী মার্কো রুবিও, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী পিট হেগসেথ এবং সিআইএ প্রধান জন রেটক্লিফ, হোয়াইট হাউসের তথ্য অনুযায়ী।
সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নে ট্রাম্প স্পষ্টভাবে বলেন, “যুদ্ধ শেষ। ঠিক আছে? আপনারা বুঝতে পারছেন তো?” তিনি আরও বলেন, “এটি একটি অনন্য মুহূর্ত। সবাই একসঙ্গে উল্লাস করছে — এটা আগে কখনও ঘটেনি। সাধারণত এক পক্ষ খুশি থাকলে অন্য পক্ষ থাকে না। কিন্তু এবার সবাই বিস্মিত ও আনন্দিত। এর অংশ হতে পারাটা আমার জন্য সম্মানের।”
হোয়াইট হাউস সূত্রে জানা গেছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ইসরায়েল ও মিশরে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া যৌথ অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন, যেখানে গাজা যুদ্ধবিরতি ও বন্দিমুক্তি চুক্তি ঘোষিত হবে।
এছাড়া ট্রাম্প মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি-এর সঙ্গে যৌথভাবে গাজা শান্তি সম্মেলনেও সভাপতিত্ব করবেন। ট্রাম্প এই উদ্যোগকে আখ্যা দিয়েছেন মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রক্রিয়ার এক “ঐতিহাসিক অধ্যায়” হিসেবে।
অন্যদিকে, ইরান সোমবার জানিয়েছে যে তাদের প্রেসিডেন্ট মাসৌদ পেজেশকিয়ান ও বিদেশমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি কেউই এই গাজা শান্তি সম্মেলনে যোগ দেবেন না। কায়রো থেকে রবিবার রাতে শেষ মুহূর্তে আমন্ত্রণ জানানো হলেও তেহরান তা প্রত্যাখ্যান করেছে।
ইরানের সরকারি সংবাদ সংস্থা আইআরএনএ জানিয়েছে, আরাগচি ‘এক্স’-এ পোস্ট করে বলেছেন, “আমরা এমন কোনও সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বসব না, যারা ইরানের জনগণের উপর আক্রমণ চালিয়েছে, হুমকি দিচ্ছে এবং নিষেধাজ্ঞা জারি রেখেছে।”
তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, জুন মাসে ১২ দিনের সংঘর্ষে মার্কিন ও ইজরায়েলি বাহিনী ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্রগুলিতে যৌথ হামলা চালায়। তবুও, তিনি যোগ করেন, “ইরান সবসময় এমন উদ্যোগকে সমর্থন করে যা ইজরায়েলের গণহত্যা বন্ধ করবে এবং প্যালেস্তানীয়দের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার রক্ষা করবে।”
১৯৭৯ সালের ইসলামিক বিপ্লবের পর থেকেই ইরান ইজরায়েলকে স্বীকৃতি দেয়নি এবং প্যালেস্তানীয়দের আন্দোলনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।
গাজা শান্তি সম্মেলন, যা ট্রাম্প ও আল-সিসি যৌথভাবে সভাপতিত্ব করবেন, তার মূল লক্ষ্য হল যুদ্ধবিরতিকে দৃঢ় করা এবং যুদ্ধ-পরবর্তী গাজা প্রশাসনের রাজনৈতিক কাঠামো নির্ধারণ করা।
সম্মেলনে ২০টিরও বেশি দেশ অংশ নেবে বলে জানা গেছে, তবে ইজরায়েল ও হামাস—দুই পক্ষের কেউই এতে উপস্থিত থাকবে না।