
মিশরে গাজা সংকট সমাধান কেন্দ্রীকৃত একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে শেষ মুহূর্তে ইস্রায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে আমন্ত্রণ জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে এই পরিকল্পনা বাতিল করতে বাধ্য হন ট্রাম্প, কারণ তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান সরাসরি হুমকি দেন, যদি নেতানিয়াহুর অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয় তবে তিনি শার্ম-এল-শেখে অবতরণ করবেন না।
মিশরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনের লক্ষ্য ছিল “গাজা সীমান্তে যুদ্ধ সমাপ্ত করা, মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা করা এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করা।” সম্মেলনে ২০টিরও বেশি দেশের নেতৃত্ব অংশগ্রহণ করেছিল, যেমন কাতার, ফিলিস্তিন, তুরস্ক, স্পেন, যুক্তরাজ্য, ইতালি, নরওয়ে, এবং জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় পরিষদের প্রতিনিধি।
ঘটনার সূত্রপাত হয় যখন জানা যায় ট্রাম্প শেষ মুহূর্তে নেতানিয়াহুকে ফোনের মাধ্যমে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। তবে নেতানিয়াহু পরে জানান যে, তিনি ছুটির ঘনিষ্ঠতার কারণে সম্মেলনে উপস্থিত হতে পারবেন না। নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক জোটের চরমদক্ষিণপন্থী নেতাদেরও প্রতিক্রিয়া ছিল, যারা সম্মেলনে তার অংশগ্রহণ হলে পদত্যাগের হুমকি দিয়েছিলেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গাজায় যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরিমাণ জারি করেছে।
এরদোগানের বাধার পাশাপাশি রাজনৈতিক ও আইনি চাপ সম্মিলিতভাবে নেতানিয়াহুর অংশগ্রহণকে প্রায় অসম্ভব করে তুলেছিল। বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি মধ্যপ্রাচ্যে কূটনৈতিক সংবেদনশীলতার একটি চিত্র, যেখানে আন্তর্জাতিক অংশীদারদের মধ্যে শক্তি ও প্রভাবের খেলাই মূল ভূমিকা পালন করছে।
এতে ট্রাম্পের পরিকল্পনা বিপর্যস্ত হলেও সম্মেলনের অন্যান্য অংশগ্রহণকারীরা শান্তি ও স্থিতিশীলতার পথে এগিয়ে যাওয়ার জন্য উদ্যোগ নিয়েছেন। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, নেতানিয়াহুর অনুপস্থিতি এই অঞ্চলে স্থিতিশীলতার প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে পারে, তবে আন্তর্জাতিক নেতৃত্বের অংশগ্রহণ আশাব্যঞ্জক হিসেবে দেখা হচ্ছে।
পরিস্থিতি দেখায়, মধ্যপ্রাচ্যে কূটনৈতিক উদ্যোগ সবসময় জটিল এবং কখনও কখনও ব্যক্তিগত রাজনৈতিক সিদ্ধান্তগুলো আন্তর্জাতিক স্তরের উত্তেজনায় প্রভাব ফেলতে পারে। ট্রাম্পের এই শেষ মুহূর্তের আমন্ত্রণ ও বাতিলের ঘটনা বিশ্ব কূটনীতিতে সংবেদনশীল এবং অবাঞ্ছিত চাপের চিত্র ফুটিয়ে তোলে।