
রক্ষণাবেক্ষণ ও আধুনিকীকরণে দীর্ঘদিনের অব্যবস্থার কারণে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার দেশের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বন্দর টার্মিনালের দায়িত্ব বিদেশি সংস্থার হাতে তুলে দিতে চলেছে। চট্টগ্রামের লালদিয়া ও নিউমুরিং কনটেনার টার্মিনাল এবং ঢাকার কেরানীগঞ্জের পানগাঁও টার্মিনাল এই তিনটি কেন্দ্র আগামী ২৫ থেকে ৩০ বছরের জন্য বিদেশি অপারেটরদের হাতে পরিচালনার দায়িত্বে থাকবে।
সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, ডিসেম্বরের মধ্যেই চুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার কথা। দেশের নৌপরিবহণ মন্ত্রক মনে করছে, এই উদ্যোগে বন্দরের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পাবে এবং বিদেশি বিনিয়োগও আকৃষ্ট হবে। চট্টগ্রাম বন্দরে বর্তমানে ১৩টি গেট থাকলেও পর্যাপ্ত স্ক্যানিং যন্ত্র না থাকায় পণ্য ওঠানামায় মারাত্মক বিলম্ব হচ্ছে। কার্যক্ষম যন্ত্রের সংখ্যা অর্ধেকেরও কম, ফলে লজিস্টিক সমস্যা তীব্র হয়েছে।
২০২৫ থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে বছরে ৫০ লক্ষেরও বেশি কনটেনার হ্যান্ডেল করতে হবে বলে সরকার অনুমান করছে। সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বিদেশি অভিজ্ঞতা ও প্রযুক্তি অপরিহার্য বলে মনে করা হচ্ছে। ভারত ও শ্রীলঙ্কার মতো দেশগুলিতে এই ধরনের অংশীদারিত্ব সফল হয়েছে তাই বাংলাদেশও একই পথে হাঁটছে।
ঢাকার পল্টনে সম্প্রতি আয়োজিত এক সম্মেলনে ‘সমুদ্রগামী জাহাজশিল্পের বিনিয়োগ সম্ভাবনা’ নিয়ে আলোচনায় অংশ নেন দেশের শীর্ষ সামুদ্রিক আধিকারিকেরা। সেখানে জানানো হয়, নতুন অংশীদারিত্ব বন্দরের আধুনিক অবকাঠামো উন্নয়নের পথ খুলে দেবে। চুক্তি সম্পন্ন হলে তা সরকারি ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে বলে সরকারের তরফে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সরকারের এই সিদ্ধান্তে একদিকে অর্থনৈতিক পুনরুজ্জীবনের আশা, অন্যদিকে দেশীয় নিয়ন্ত্রণ হারানোর আশঙ্কাও রয়েছে বলে বিশ্লেষকদের মত। তবে আপাতত বন্দর ব্যবস্থাপনায় বিদেশি সংস্থার অংশগ্রহণই দেশের উন্নয়নের একমাত্র কার্যকর পথ বলে মনে করা হচ্ছে।
