
দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটে অবস্থিত শতাব্দীর প্রাচীন বুড়াকালী মাতার মন্দির প্রতি বছর কার্ত্তিক মাসের দীপান্বিতা অমাবস্যায় অনন্য কালীপুজোর আয়োজন করে। আত্রেয়ী নদীর তীরে একসময় ঘন জঙ্গলে ঘেরা এই মন্দির এলাকায় নিজে থেকেই ভেসে উঠেছিল বুড়াকালী মাতার বিগ্রহ। এক তান্ত্রিক সেই সময় বিগ্রহকে তুলে মন্দিরে নিয়ে এসে পুজোর সূত্রপাত করেন। সেই থেকেই মায়ের নিত্যপুজো অব্যাহত রয়েছে।
প্রাচীন বিশ্বাস অনুযায়ী সন্ধ্যায় মায়ের নুপুরের আওয়াজ ও ফুলের সুগন্ধি চারপাশে ছড়িয়ে পড়ত। নাটোরের রানী ভবানী পর্যন্ত মন্দিরে পুজো দিতে আসতেন এবং আত্রেয়ী নদীর জল নিয়ে মায়ের আরাধনা করতেন। প্রায় একশ বছর আগেও মন্দিরের আশেপাশে জনবসতি ছিল না। বর্তমানে আত্রেয়ী নদী মন্দির থেকে পশ্চিম দিকে সরে গেছে।
বুড়াকালী মাতার মন্দিরের পুজো কমিটি প্রতি বছর দীপান্বিতা অমাবস্যার সময় মন্দির পথ আলোকসজ্জায় ভরিয়ে দেয়। সকাল থেকেই ভক্তদের ঢল নামে, সন্ধ্যার পর ভক্তদের উপস্থিতি আরও বাড়ে। জেলা পুলিশ প্রশাসন পুজোর নিরাপত্তা এবং ব্যবস্থাপনায় সহযোগিতা করে। পুজোর সময় প্রচুর অন্নভোগ এবং বিশেষভাবে পাঁঠা বলি ও বোয়াল মাছের ভোগ দেওয়া হয়।
সপ্তাহে মঙ্গলবার ও শনিবার খিচুড়ি ভোগ এবং অন্যান্য দিনে অন্নভোগ দেওয়া হয়। মন্দিরের সঙ্গে শীতলা মাতা ও শিব ঠাকুরের মন্দিরও রয়েছে। চৈত্র সংক্রান্তিতে শীতলা পুজোর পর মাশানকালীর পুজোর মাধ্যমে বুড়াকালী মাতার বাৎসরিক পুজোর সূচনা হয়। সারাবছরই মা বুড়াকালী নিয়ম ও নিষ্ঠার সঙ্গে নিত্যপুজিত হন। ভক্তদের অগাধ বিশ্বাস এই মাতার প্রতি বুড়াকালী মাতার পুজোকেই মিথোলজিক্যাল ভাবেই অঞ্চলটিকে ধর্মীয় প্রাণশক্তিতে ভরিয়ে রাখে।
