
প্যারিসের লুভ্র জাদুঘরে মাত্র সাত মিনিটে কোটি টাকার সম্পদ চুরির ঘটনায় কেঁপে উঠেছে বিশ্বের সাংস্কৃতিক মহল। সেই ঘটনার পরই কলকাতার ভারতীয় জাদুঘরে নিরাপত্তা জোরদারের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। এশিয়ার প্রাচীনতম এই জাদুঘরে ইতিমধ্যেই ৭০০-রও বেশি সিসি ক্যামেরা রয়েছে। এবার সেই ক্যামেরাগুলিতে যুক্ত হচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি। লক্ষ্য, যান্ত্রিক নজরদারিকে আরও নিখুঁত করা এবং অপ্রয়োজনীয় সতর্ক সংকেত বন্ধ রাখা।
২০০৪ সালে শেষবার চুরি হয়েছিল এক দুর্লভ বুদ্ধমূর্তি, যা এখনও উদ্ধার হয়নি। তার পর থেকেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা ধীরে ধীরে উন্নত করা হয়েছে। বর্তমানে জাদুঘরের ৩৫টি গ্যালারিতে রয়েছে শাহজাহানের সোনা-রুবি জড়ানো সুরাপাত্র থেকে মিশরের মমি অমূল্য ঐতিহাসিক নিদর্শন। সেগুলির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ৫৭ জন সিআইএসএফ জওয়ান এবং জাদুঘরের নিজস্ব ৪০ জন প্রহরী কাজ করছেন। প্রতিটি গ্যালারিতে নজরদারি কর্মী মোতায়েন রয়েছে, যারা ওয়াকিটকির মাধ্যমে সংযুক্ত থাকেন।
জাদুঘরে প্রবেশের সময় টিকিট স্ক্যানিং ও ব্যাগ চেকের ব্যবস্থা বাধ্যতামূলক। নিয়ন্ত্রণ কক্ষে বসে পুরো প্রাঙ্গণের উপর ২৪ ঘণ্টা নজরদারি চলে। একইসঙ্গে চলমান সংস্কার কাজে যুক্ত কর্মীদেরও নির্দিষ্ট যাচাই প্রক্রিয়ার পর নিয়োগ করা হয়েছে।
তবে জাদুঘরের বাইরে ফুটপাথজুড়ে থাকা হকারদের উপস্থিতি এখনও কর্তৃপক্ষের উদ্বেগের কারণ। ওই অংশটি জাদুঘরের নিয়ন্ত্রণে না থাকায় সম্ভাব্য ঝুঁকি এড়াতে পুরসভা ও পুলিশের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।
বিশ্বের অন্যতম সুরক্ষিত জাদুঘর হওয়ার লক্ষ্যেই কলকাতার ভারতীয় জাদুঘর এখন প্রযুক্তিনির্ভর নিরাপত্তায় নতুন অধ্যায় শুরু করতে চলেছে। লুভ্রের মতো ঘটনা যাতে আর কোথাও না ঘটে, তার প্রস্তুতি এবার শহরেই।
