
ছত্রিশগড় হাইকোর্ট সম্প্রতি এক মহিলার আবেদন খারিজ করেছে, যেখানে তিনি তার বাবার সম্পত্তিতে অধিকার চেয়েছিলেন। বর্তমান হিন্দু উত্তরাধিকার আইন অনুযায়ী ছেলে-মেয়ের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই এবং সকল সন্তানই সমানভাবে বাবার সম্পত্তির অধিকারী। তবে আদালত জানান, এই রায় বিশেষভাবে প্রযোজ্য সেইসব সম্পত্তির ক্ষেত্রে যেখানে পিতার মৃত্যু হিন্দু উত্তরাধিকারের আইন প্রবর্তনের আগে হয়েছে।
আদালত উল্লেখ করেছেন, ১৯৫৬ সালের আগে উত্তরাধিকারের বিষয়টি মিতাক্ষরা আইন অনুসারে পরিচালিত হতো। ওই আইন অনুযায়ী কোনো মহিলা তখনই বাবার সম্পত্তির অধিকারী হতো যখন কোনো পুরুষ উত্তরাধিকারী না থাকত। এই মামলার আবেদনকারী মহিলার বাবার মৃত্যু হয়েছিল ১৯৫০-৫১ সালে। তাই তার ক্ষেত্রে হিন্দু উত্তরাধিকারের নতুন আইন প্রযোজ্য নয় এবং সম্পত্তির একমাত্র উত্তরাধিকারী পুত্র সন্তান।
২০০৫ সালে হিন্দু উত্তরাধিকার আইনে একটি গুরুত্বপূর্ণ সংশোধন আনা হয়, যেখানে কন্যাদের পুত্রদের মতো সমান অধিকার দেওয়া হয়। তবে সংশোধনের আগে জন্ম নেওয়া সন্তানদের ক্ষেত্রে পুরনো আইনই প্রযোজ্য। আদালত এ বিষয়ে আরও স্পষ্ট করেছেন, যদি পিতা উইল পত্রে কন্যার নাম উল্লেখ করতেন, তাহলে কন্যা সম্পত্তির অধিকার পেত, কিন্তু তা না হলে শুধুমাত্র পুত্রই উত্তরাধিকারী হবেন।
এই রায়ের মাধ্যমে আদালত পরিষ্কার করেছে যে, হিন্দু উত্তরাধিকারের আইন প্রবর্তনের আগে মৃত ব্যক্তিদের সম্পত্তিতে কন্যাদের স্বয়ংক্রিয়ভাবে অধিকার নেই। ফলে মিতাক্ষরা আইন এখনও প্রযোজ্য এবং পুরনো আইনের ভিত্তিতে পুত্র সন্তানই একমাত্র উত্তরাধিকারী।
মোটকথা, হাইকোর্টের এই রায় পুরনো আইন ও নতুন আইনের মধ্যে পার্থক্য স্পষ্ট করেছে। বর্তমান সময়ের হিন্দু উত্তরাধিকার আইনে সমান অধিকার থাকলেও, তার প্রযোজ্য সময়কাল গুরুত্বপূর্ণ। পুরনো আইন অনুসারে কিছু ক্ষেত্রে মেয়েদের স্বাভাবিকভাবে সম্পত্তিতে অধিকার নেই। এই রায় ভবিষ্যতে অনুরূপ মামলায় নির্দেশক হিসেবে কাজ করবে।
এই বিষয়টি প্রমাণ করছে, সম্পত্তি বিতরণের ক্ষেত্রে আইন ও তার কার্যকর হওয়ার তারিখ কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
