
পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্রভাণ্ডার নিয়ে নতুন বিতর্ক তৈরি হয়েছে। আমেরিকার প্রাক্তন সিআইএ আধিকারিক জন কিরিয়াকুর দাবি, জেনারেল পারভেজ মুশারফের শাসনকালে ইসলামাবাদ দেশের পরমাণু অস্ত্রের নিয়ন্ত্রণ ওয়াশিংটনের হাতে তুলে দিয়েছিল। তাঁর বক্তব্যে ইঙ্গিত মিলেছে, আমেরিকার চাপ ও আর্থিক প্রলোভনের জেরে মুশারফ নাকি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
প্রাক্তন সিআইএ আধিকারিক জন কিরিয়াকু বহু বছর সন্ত্রাসবিরোধী ডেস্কে দায়িত্বে ছিলেন এবং পাকিস্তানেও কাজ করেছেন। তাঁর দাবি, কোটি কোটি ডলারের অনুদান পেয়ে মুশারফ আমেরিকার সঙ্গে গোপন চুক্তি করেন। এর ফলে পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্রের কমান্ড এবং নিয়ন্ত্রণ চলে যায় এক মার্কিন জেনারেলের তত্ত্বাবধানে। তাঁর মতে, এই ঘটনার পর দক্ষিণ এশিয়ায় ভারত-পাকিস্তান পরমাণু যুদ্ধের আশঙ্কা অনেকটাই কমে যায়।
এই দাবি ঘিরে আন্তর্জাতিক মহলে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন, এমন তথ্য যদি সত্যি হয়, তবে তা পাকিস্তানের সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে বড় আঘাত। আবার কেউ কেউ বলছেন, কিরিয়াকু অতীতে মার্কিন সরকারের বিরুদ্ধে তথ্য ফাঁসের অভিযোগে জেলে গিয়েছিলেন, ফলে তাঁর বক্তব্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতও হতে পারে।
২০০১ সালের পর ‘সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধ’-এর সময় পাকিস্তান ছিল আমেরিকার ঘনিষ্ঠ মিত্র। তখন থেকেই ওয়াশিংটনের অর্থনৈতিক ও সামরিক সাহায্যের ওপর নির্ভরশীল ছিল ইসলামাবাদ। মুশারফ সরকার সে সময় আমেরিকার সঙ্গে একাধিক প্রতিরক্ষা ও গোয়েন্দা সহযোগিতা চুক্তি করে।
এই নতুন দাবিতে ফের প্রশ্ন উঠেছে— পাকিস্তানের হাতে আদৌ পরমাণু অস্ত্রের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ আছে কি না। ইসলামাবাদ সরকার এখনও পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি, তবে মার্কিন দিক থেকেও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া মেলেনি। আন্তর্জাতিক মহল এখন নজর রাখছে, পাকিস্তান এই অভিযোগের জবাব দেয় কি না।
