
রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের তেল বাণিজ্য নিয়ে পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞা নীতিতে প্রশ্ন তুললেন কেন্দ্রীয় বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল। তাঁর বক্তব্য, যখন ইউরোপের বহু দেশ নিজেদের জ্বালানি সমস্যা সমাধানে মার্কিন অনুমোদন পেয়েছে, তখন শুধু ভারতকেই কেন আলাদা করে নিশানা করা হচ্ছে?
লন্ডনে ব্রিটিশ বাণিজ্যমন্ত্রী ডগলাস আলেকজান্ডার-এর সঙ্গে এক আলোচনায় গোয়েল এই প্রশ্ন তোলেন। আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু ছিল রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত তেল কোম্পানি রসনেফট (Rosneft)-কে ঘিরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞা।
বৈঠকে ব্রিটিশ মন্ত্রী স্বীকার করেন যে লন্ডন ও বার্লিন ইতিমধ্যেই ওয়াশিংটনের অনুমতিতে নিজেদের জ্বালানি সমস্যার সমাধান করেছে। তখনই গোয়েল সোজাসুজি প্রশ্ন করেন, “তাহলে শুধু ভারতকেই কেন আলাদা করে দোষারোপ করা হচ্ছে?”
এই সংলাপের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। নেটিজেনদের একাংশ গোয়েলের এই সাহসী ও সরাসরি প্রশ্নের প্রশংসা করেছেন।
ব্রিটিশ মন্ত্রী কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে ব্যাখ্যা দেন যে,“এটি আসলে রসনেফটের একটি নির্দিষ্ট সহযোগী সংস্থাকে ঘিরে সমস্যা। এসে কথা বলুন, আমার দরজা সবসময় খোলা।”
কিন্তু পীযূষ গোয়েল তাতেই থামেননি। তিনি জানান, ভারতেও রসনেফটের সহযোগী সংস্থা রয়েছে এবং সেই কারণে নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগের এই বৈষম্যে “পশ্চিমী দ্বিচারিতা” স্পষ্ট করে দেয়।
এই ঘটনার মাধ্যমে আবারও উঠে এসেছে পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলোর দ্বিমুখী নীতি— যেখানে ইউরোপীয় মিত্রদের জন্য নিষেধাজ্ঞায় শিথিলতা থাকে, অথচ ভারত বা চিনের মতো এশিয়ার দেশগুলিকে কূটনৈতিক চাপে রাখা হয়।
উল্লেখ্য, চলতে থাকা নিষেধাজ্ঞা বিতর্কের মধ্যেই নয়াদিল্লি বারবার জানিয়েছে যে, রাশিয়া থেকে তেল কেনা হচ্ছে একান্ত অর্থনৈতিক প্রয়োজনে এবং আন্তর্জাতিক আইন মেনে।
এই ভিডিও প্রকাশের কয়েকদিন আগেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নতুন করে রাশিয়ার দুই বৃহত্তম তেল কোম্পানি— রসনেফট (Rosneft) ও লুকঅয়েল (Lukoil)-এর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। কারণ হিসেবে ওয়াশিংটন বলেছে, রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করতে কোনও “গুরুতর পদক্ষেপ” নিচ্ছে না।
এর পর হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট দাবি করেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প-এর অনুরোধে ভারত ও চিন রাশিয়ার তেল কেনা কিছুটা কমিয়েছে। যদিও নয়া দিল্লি এই দাবির সত্যতা নিয়ে কোনরকম মন্তব্য করেনি।
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র ভারতের রপ্তানি পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে, যার অর্ধেকই নাকি রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনার ‘শাস্তি’ হিসেবে চাপানো হয়েছে।
