
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার প্রধানমন্ত্রী মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে বিতর্কিত এক সিদ্ধান্তে অনুমোদন দিয়েছে পলাতক ইসলামি প্রচারক জাকির নায়কের এক মাসের সফরকে। নয় বছর আগে ২০১৬ সালের ঢাকার হলি আর্টিজান হামলার পর যাকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল, সেই নায়কের জন্য এবার খুলে দেওয়া হচ্ছে দেশের দরজা।
২০১৬ সালের ওই জঙ্গি হামলায় ২২ জন নিহত হন, যাদের মধ্যে বিদেশিরাও ছিলেন। তদন্তে উঠে আসে, হামলাকারীরা জাকির নায়কের বক্তৃতা ও ‘পিস টিভি’–র প্রচারে প্রভাবিত হয়েছিল। সেই থেকেই বাংলাদেশে তার প্রচার ও চ্যানেল নিষিদ্ধ ছিল। শুধু বাংলাদেশ নয়, ভারত, যুক্তরাজ্য ও মালয়েশিয়াসহ একাধিক দেশেও নিষিদ্ধ ‘পিস টিভি’ এর বিরুদ্ধে অভিযোগ, এটি ধর্মীয় বিদ্বেষ ও চরমপন্থা ছড়ায়।
ভারতে জাকির নায়কের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা চলছে অর্থ পাচার, ঘৃণাত্মক বক্তৃতা ও সন্ত্রাসে উস্কানির অভিযোগে তিনি ওয়ান্টেড তালিকায় আছেন। বর্তমানে মালয়েশিয়ায় আশ্রয়ে থাকা নায়ককে ঢাকায় লালগালিচা দিয়ে স্বাগত জানানোর সিদ্ধান্তে ক্ষোভ ছড়িয়েছে দেশ-বিদেশে। বিশেষ করে এমন সময়ে এই সফর অনুমোদন, যখন বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকা ও নীতিমালা নিয়ে প্রশ্ন বাড়ছে, তা রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের চোখে উদ্বেগজনক সংকেত।
সমালোচকদের মতে, এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের সন্ত্রাসবিরোধী অবস্থান ও ধর্মনিরপেক্ষ ভাবমূর্তিকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। যারা একসময় নায়কের প্রচারণায় অনুপ্রাণিত হয়ে রক্তক্ষয়ী হামলা চালিয়েছিল, সেই স্মৃতি এখনো তাজা। তাই ইউনুস সরকারের এই পদক্ষেপ শুধু ধর্মীয় তোষণ নয়, বরং নিরাপত্তা ও আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তির জন্য বিপজ্জনক এক বার্তা বলে মনে করা হচ্ছে।
