
ভারত–চিন সীমান্তে ফের উত্তেজনার আবহ। স্যাটেলাইট চিত্রে ধরা পড়েছে, ম্যাকমোহন লাইন থেকে মাত্র ৪০ কিলোমিটার দূরে তিব্বতে ৩৬টি স্থায়ী বিমানঘাঁটি তৈরি করেছে চিন। প্রতিটি ঘাঁটি এমনভাবে নির্মিত যে সেখানে যুদ্ধবিমান ও ড্রোন রাখা যাবে। এপ্রিল মাস থেকেই এই কাজ শুরু হয় এবং বর্তমানে সেখানে চিনা বায়ুসেনার সরঞ্জাম, CH-4 ড্রোন-সহ একাধিক সামরিক ব্যবস্থা মোতায়েন রয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, চিন এই ঘাঁটিগুলি ভারতীয় সীমান্তের দিকে নজরদারি ও সামরিক আগ্রাসনের জন্য ব্যবহার করতে পারে। তিব্বতের লুনজে, তিংরি ও বারাং অঞ্চলে নির্মিত এই ঘাঁটিগুলি এলএসি–র কাছাকাছি হওয়ায় সরাসরি প্রতিরক্ষা ঝুঁকি তৈরি করছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, এই ঘাঁটিগুলির নিচে সুড়ঙ্গের মাধ্যমে জ্বালানি ও গোলাবারুদ মজুত করা হচ্ছে, যাতে যুদ্ধকালেও সেগুলি নিরাপদ থাকে।
অরুণাচল প্রদেশের তাওয়াং থেকে মাত্র ১০৭ কিলোমিটার দূরে এই সামরিক তৎপরতা ভারতের প্রতিরক্ষা মহলে উদ্বেগ বাড়িয়েছে। বিশেষত ২০২০ সালের গালওয়ান সংঘাতের পর থেকে সীমান্ত পরিস্থিতি অতি সংবেদনশীল। চিনের এই প্রস্তুতি ইঙ্গিত দিচ্ছে, প্রয়োজনে সীমান্তে তাৎক্ষণিক প্রতিরোধ বা আক্রমণ চালাতে পারে তারা।
অন্যদিকে, ভারতও পিছিয়ে নেই। লাদাখ ও অরুণাচলে একাধিক নতুন এয়ারফিল্ড, হেলিপ্যাড ও টানেল তৈরি হচ্ছে সেনা মুভমেন্ট দ্রুত করার জন্য। ইতিমধ্যেই রাফাল ও তেজস যুদ্ধবিমান প্রস্তুত, সঙ্গে মার্কিন ‘স্কাই গার্ডিয়ান’ ও ইজরায়েলি হেরন ড্রোনও রয়েছে। ভারত-চিন সীমান্তে ৩৪১৭ কিলোমিটার স্ট্র্যাটেজিক রাস্তা সম্পূর্ণ হওয়ার পথে।
চিনের এই নয়া ঘাঁটি নির্মাণ স্পষ্ট করে দিচ্ছে, এশিয়ার আকাশে ফের প্রতিযোগিতার হাওয়া বইছে। নয়াদিল্লি পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে ঘনিষ্ঠভাবে, কারণ সীমান্তে স্থিতাবস্থা রক্ষার প্রশ্নে এখন কূটনীতি ও সামরিক শক্তি দু’য়েরই ভারসাম্য বজায় রাখা জরুরি হয়ে পড়েছে।
