
মুম্বইয়ে এক ভয়াবহ ডিজিটাল প্রতারণার ঘটনায় প্রাণ গেল ৮২ বছরের এক অবসরপ্রাপ্ত সরকারি আধিকারিকের। জীবনের সমস্ত সঞ্চয় ১.১৯ কোটি টাকা খুইয়ে মানসিক চাপে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। ওই বৃদ্ধ ও তাঁর ৮০ বছরের স্ত্রীকে প্রতারকেরা ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’-এর নামে তিন দিন ধরে বাড়িতে বন্দি করে রাখে বলে জানা গেছে।
ঘটনাটি ঘটে ১৬ অগস্ট থেকে ১৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে। প্রতারকেরা নিজেদের মুম্বই সাইবার পুলিশ ও সিবিআই আধিকারিক পরিচয় দিয়ে দম্পতিকে জানায়, তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ও আধার কার্ড একটি মানি লন্ডারিং মামলায় জড়িত। সেই অজুহাতে মোবাইল ক্যামেরা সারাক্ষণ অন রাখতে ও একাধিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা স্থানান্তরের নির্দেশ দেওয়া হয়। ভয় ও বিভ্রান্তির চোটে বৃদ্ধ দম্পতি জীবনের সঞ্চয় প্রতারকদের হাতে তুলে দেন। এমনকি বিদেশে থাকা তিন মেয়ের পাঠানো সেভিংসও তারা তুলে নেয়।
কয়েক দিন পর যোগাযোগ বন্ধ হলে তাঁরা বুঝতে পারেন প্রতারণার শিকার হয়েছেন। পুলিশে অভিযোগ জানানোর পরও মানসিক ধাক্কা সামলাতে পারেননি বৃদ্ধ। ২২ অক্টোবর হঠাৎ বাড়ির মেঝেতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
মুম্বই সাইবার পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, প্রতারণাটি শুরু হয়েছিল একটি ফোনকল থেকে, যেখানে প্রতারক নিজেকে “এনকাউন্টার স্পেশালিস্ট” বলে পরিচয় দেয়। পরে আরও একজন নিজেকে সিবিআই আধিকারিক দাবি করে ভয় দেখায় “হোম অ্যারেস্ট”-এর।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কোনও সরকারি সংস্থা ফোনে ব্যক্তিগত তথ্য বা টাকা দাবি করে না। ফোনে গ্রেফতার করার নিয়মও নেই। এই ধরনের ঘটনার ক্ষেত্রে আতঙ্কিত না হয়ে দ্রুত থানায় যোগাযোগ করাই একমাত্র উপায়।
মহারাষ্ট্র পুলিশ সতর্কতা জারি করে নাগরিকদের অনুরোধ জানিয়েছে অচেনা নম্বর থেকে ফোন এলে ব্যক্তিগত তথ্য বা ব্যাঙ্ক সংক্রান্ত তথ্য কোনও অবস্থাতেই শেয়ার করবেন না।
