
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ফের চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দক্ষিণ কোরিয়ায় সফরকালে হঠাৎই তিনি ঘোষণা করলেন যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধ দফতরকে পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ সিদ্ধান্তের ফলে নতুন করে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ বাড়ছে। বিশেষ করে রাশিয়া ও চিনের সাম্প্রতিক সামরিক আগ্রাসনের প্রেক্ষিতে ট্রাম্পের এই পদক্ষেপকে ওয়াশিংটনের শক্তির প্রদর্শন হিসেবেই দেখা হচ্ছে।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে রাশিয়া একাধিক পরমাণু শক্তি-চালিত অস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে। বিশেষত ‘বুরেভেস্টনিক’ ক্ষেপণাস্ত্র ও ‘পোসাইডন’ টর্পেডো পরীক্ষায় সফল হওয়ার পরই ট্রাম্প প্রশাসন দ্রুত প্রতিক্রিয়া দেখায়। এই ঘটনার সঙ্গে মিল রেখেই যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্রভান্ডারকে নবীকরণের পথে নামার নির্দেশ দেন প্রেসিডেন্ট। তাঁর দাবি, আমেরিকার পরমাণু অস্ত্রশক্তি বিশ্বের সর্বাধিক উন্নত, তবে প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলির ক্রমবর্ধমান প্রস্তুতির কারণে পুনরায় পরীক্ষা শুরু করা জরুরি হয়ে উঠেছে।
ট্রাম্প বর্তমানে এশিয়া সফরে রয়েছেন মালয়েশিয়া ও জাপান ঘুরে তিনি এখন দক্ষিণ কোরিয়ায়। সেখানেই বৃহস্পতিবার সকালে চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিঙের সঙ্গে তাঁর বৈঠক হয়। বৈঠকের আগেই সমাজমাধ্যমে বার্তা দিয়ে তিনি জানান, আমেরিকা অবিলম্বে পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষার প্রক্রিয়া শুরু করবে। ফলে দুই পরাশক্তি রাশিয়া ও চিন উভয়ের দিকেই চাপ তৈরি করার ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন সম্প্রতি দাবি করেছেন, তাঁদের নতুন প্রজন্মের পরমাণু ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ভবিষ্যতের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকেও ভেদ করতে সক্ষম। এই ঘোষণা পশ্চিমা দেশগুলির মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়েছে। মার্কিন প্রশাসনের মতে, রাশিয়া ও চিন আগামী কয়েক বছরের মধ্যে পারমাণবিক শক্তির দিক থেকে আমেরিকার সমকক্ষ হয়ে উঠতে পারে। তাই ট্রাম্প চান, যুক্তরাষ্ট্র আগেভাগেই প্রস্তুত থাকুক।
ওয়াশিংটন সূত্রে খবর, এই নির্দেশের পর আমেরিকার প্রতিরক্ষা গবেষণা সংস্থা নতুন প্রজন্মের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন-ভিত্তিক পরমাণু প্রযুক্তি পুনরায় সক্রিয় করছে। একাধিক সামরিক ঘাঁটিতে ইতিমধ্যেই প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সরবরাহের কাজ শুরু হয়েছে। আন্তর্জাতিক মহলে আশঙ্কা ট্রাম্পের এই পদক্ষেপে পারমাণবিক প্রতিযোগিতা আরও তীব্র হবে এবং বিশ্বশান্তি নতুন করে হুমকির মুখে পড়তে পারে।
এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে ট্রাম্প স্পষ্ট করে দিলেন, তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্র কূটনৈতিক সংযম নয়, বরং শক্তির প্রদর্শনকেই প্রাধান্য দেবে। বিশ্ব রাজনীতি তাই আবারও পরমাণু উদ্বেগে মুখর।
