
উত্তর ২৪ পরগনার খড়দহে ফের পাসপোর্ট জালিয়াতি মামলায় তোলপাড়। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় খড়দহ বাজার সংলগ্ন বিটি রোডের নর্মদা আবাসনে হানা দেয় কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা ইডি। মনোজ কুমার গুপ্তা নামে এক পরিবহণ ব্যবসায়ীর ফ্ল্যাটে দীর্ঘক্ষণ তল্লাশি চলে। সূত্রের খবর, তাঁর সঙ্গে জাল পাসপোর্ট চক্রের যোগ থাকতে পারে বলে সন্দেহ তদন্তকারীদের।
তদন্ত সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক সপ্তাহ আগেই বিরাটি থেকে ধৃত হয় আজাদ মল্লিক নামে এক ব্যক্তি। বাংলাদেশ হয়ে সে ভুয়ো কাগজপত্র তৈরি করে নিজের নামে পাসপোর্ট ও ড্রাইভিং লাইসেন্স বানায়। জেরায় তার কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই শুরু হয় একের পর এক অভিযান। ইডি ইতিমধ্যেই উত্তর ২৪ পরগনা ও নদিয়ার সীমান্তবর্তী এলাকায় একাধিক জায়গায় তল্লাশি চালিয়েছে।
নদিয়ার শিবপুর থেকে গ্রেফতার হয় ইন্দুভূষণ হালদার নামে আরও এক ব্যক্তি, যার সাইবার ক্যাফে থেকেই তৈরি হতো এই ভুয়ো পাসপোর্ট। তদন্তকারীরা মনে করছেন, এই চক্র শুধু নথি জালিয়াতি নয়, বরং এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে সীমান্ত পারাপার, ভুয়ো পরিচয়ে ভ্রমণ এবং অর্থ পাচারের মতো গুরুতর অপরাধ।
ইডি সূত্রে ইঙ্গিত, এই নেটওয়ার্কে আরও একাধিক ব্যবসায়ী ও দালালের নাম জড়িয়ে রয়েছে। খড়দহের তল্লাশিতে উদ্ধার হয়েছে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি ও ইলেকট্রনিক ডিভাইস, যা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
দশ বছরে প্রায় নয়শো বার ব্যাঙ্কক সফর করেছেন বলে জানা গেছে অভিযুক্ত ব্যবসায়ী মনোজ গুপ্তা। এই অস্বাভাবিক বিদেশযাত্রা নিয়েই বাড়ছে সন্দেহ। তদন্তকারীরা মনে করছেন, বিদেশে অবৈধ আর্থিক লেনদেন এবং পাচারের সঙ্গে সরাসরি যোগ থাকতে পারে তাঁর।
সব মিলিয়ে, পুরনো জাল পাসপোর্ট মামলায় ফের নতুন মোড় এনেছে ইডির এই অভিযান। রাজ্যের একাধিক জেলায় ছড়িয়ে পড়ছে তদন্তের জাল, আর তাতে উঠে আসছে সীমান্ত-জালিয়াতির অন্ধকার চক্রের নেপথ্যের পর্দা।
