
পশ্চিমবঙ্গে চলমান বিশেষ নিবিড় সংশোধন পর্বে এবার ভোটার তালিকা শুদ্ধিকরণের কাজে যুক্ত হল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। মৃত, ভুয়ো ও দ্বৈত নামের অভিযোগ বাড়তে থাকায় নির্বাচন কমিশন আরও নির্ভুল ও দ্রুত নজরদারির লক্ষ্যে এআই-নির্ভর মুখচ্ছবি বিশ্লেষণ পদ্ধতি চালু করেছে। ভোটারদের তথ্যভাণ্ডারে থাকা ছবির মিল খুঁজে এই প্রযুক্তি শনাক্ত করবে কোনও ছবি অন্যত্র ব্যবহার করা হয়েছে কি না। বিশেষ করে ভিনরাজ্যে কর্মরত শ্রমিকদের ছবি অপব্যবহার করে জাল নাম তোলার প্রবণতা রুখতেই এই পদক্ষেপ জরুরি হয়ে উঠেছে।
তবে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়লেও মাঠপর্যায়ে দায়ভার কমছে না। কমিশন স্পষ্ট করেছে, তালিকা যাচাইয়ের মূল দায়িত্ব রইল বুথ-লেভেল অফিসারদের হাতে। তাঁদেরই প্রতিটি পরিবারে গিয়ে ছবি তোলা, তথ্য যাচাই, স্বাক্ষর মিলিয়ে দেখা ও হাতে লেখা বিবৃতি সংগ্রহ করতে হবে। সংশোধন শেষে কোনও মৃত বা ভুয়ো নাম তালিকায় থেকে গেলে তার দায়ও বহন করতে হবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকেই।
এদিকে আধার-সংক্রান্ত তথ্যও কমিশনের সামনে নতুন উদ্বেগ উত্থাপন করেছে। ইউআইডিএআই জানিয়েছে, রাজ্যের প্রায় ৩২ থেকে ৩৪ লক্ষ আধার নম্বর নিষ্ক্রিয় রয়েছে, যাদের উল্লেখযোগ্য অংশের মৃত্যুর সম্ভাবনা প্রবল। এই তথ্য ভোটার তালিকা শুদ্ধিকরণে গুরুত্বপূর্ণ সহায়ক হতে পারে। রাজ্যে বর্তমানে ভোটারের সংখ্যা ৭ কোটি ৬৬ লক্ষের বেশি, প্রতিটি কেন্দ্রেই গড়ে প্রায় ৯৫০ জন ভোটার তালিকাভুক্ত।
এসআইআর প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর ৮ কোটি ফর্ম বিলি হয়েছে, এবং ৪ ডিসেম্বরের মধ্যে সংগ্রহের কাজ শেষ হবে। অনেকেই ফর্ম পূরণে ভুল হলে তার সমাধান বা ওটিপি সংক্রান্ত নিয়ম নিয়ে বিভ্রান্ত ছিলেন। সেই কারণে মুখ্য নির্বাচনী দফতর বিস্তারিত নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে যাতে নাগরিকরা সঠিকভাবে তথ্য জমা দিতে পারেন।
এই পুরো প্রক্রিয়ার লক্ষ্য রাজ্যের ভোটার তালিকার স্বচ্ছতা ও নির্ভুলতা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে দেওয়া।
