
কলকাতার মানব পাচার চক্রের পুরনো মামলায় তৃণমূলের সংখ্যালঘু সেলের নেতা আজমল সিদ্দিকিকে ইডি তলব করেছে। মঙ্গলবার সকালে নথি-পত্র সঙ্গে নিয়ে তিনি ইডির দফতরে হাজিরা দিয়েছেন। ইডি তাঁকে মানব পাচারের মামলায় জিজ্ঞাসাবাদ করছে এবং বেআইনি লেনদেন সংক্রান্ত ব্যাংক নথি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
মামলার প্রাথমিক তদন্তে কলকাতার একাধিক ব্যবসায়ী এবং সিভিল ইঞ্জিনিয়ারের বাড়িতে অভিযান চালানো হয়েছে। গত ৭ নভেম্বরের তল্লাশি অভিযানে নগদ এক কোটি টাকার বেশি টাকা উদ্ধার এবং দুটি বিলাসবহুল গাড়ি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। অভিযুক্ত জগজিৎ সিংহ, আজমল সিদ্দিক এবং বিষ্ণু মুন্দ্রাসহ তাঁদের সহযোগীদের বাড়িতেও ইডি তল্লাশি চালিয়েছে।
মানব পাচারের অভিযোগ প্রথম প্রকাশ্যে আসে ২০১৫ সালে। অভিযোগ, ভারতের বিভিন্ন জায়গা থেকে অভাবী পরিবারের মেয়েদের চাকরির প্রলোভনে কলকাতায় নিয়ে এসে নিউটাউনের ভাড়া করা ফ্ল্যাটে আটকানো হতো। পরে তাঁদের বাধ্য করা হতো পানশালায় নাচতে এবং জোর করে যৌনকর্মী হিসেবে কাজ করানো হতো।
ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, মামলার তদন্তভার প্রাথমিকভাবে পুলিশের হাতে থাকলেও পরে ইডি তদন্তভার গ্রহণ করে। চলতি বছরের নভেম্বরে তল্লাশি অভিযান শুরু হয়। নাগেরবাজারের এক সিভিল ইঞ্জিনিয়ার এবং সল্টলেকের তিন ব্যবসায়ী দীর্ঘদিন ধরে গোয়েন্দাদের নজরে ছিলেন।
এবারের তলবের মাধ্যমে ইডি মামলার তদন্তকে আরও গভীর করতে চায়। তদন্তে মানব পাচারের সঙ্গে যুক্ত নেটওয়ার্ক, অর্থের উৎস এবং বৈধতার বাইরে পরিচালিত লেনদেনের তথ্য সংগ্রহ করা হবে। মামলার সমস্ত তথ্য যাচাই করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মামলার প্রেক্ষিতে কলকাতা ও সল্টলেক এলাকায় মানব পাচার চক্রের বিরুদ্ধে তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ইডি সূত্রের খবর, তদন্ত চলাকালীন সময়ে আরও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের তলব করা হতে পারে এবং সম্পত্তি ও অর্থের হিসাব খতিয়ে দেখা হবে।
এই মামলার পুনঃতলব ইডির পক্ষ থেকে মানব পাচার প্রতিরোধে কেন্দ্রীয় সংস্থার সক্রিয় অবস্থানের প্রমাণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
