
ইউক্রেন আগামী দশ বছরে ফ্রান্স থেকে সর্বোচ্চ একশ রাফাল যুদ্ধবিমান, আধুনিক ড্রোন, আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ও গুরুত্বপূর্ণ সামরিক প্রযুক্তি সংগ্রহের প্রাথমিক চুক্তি সই করেছে। প্যারিসে দুই দেশের প্রেসিডেন্টের বৈঠকে এই চুক্তি ইউক্রেনের দীর্ঘমেয়াদি নিরাপত্তা কৌশলে সবচেয়ে বড় পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
চুক্তি অনুযায়ী, ইউক্রেন ভবিষ্যতে একশ রাফাল বিমানের পাশাপাশি শক্তিশালী ফরাসি রাডার, আটটি স্যাম্প/টি আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং একাধিক লঞ্চিং ইউনিট পাবে। এই অস্ত্রসম্ভার পরবর্তী দশ বছরে ধাপে ধাপে সরবরাহ করা হবে। রাফাল ফ্রান্সের সর্বাধুনিক মাল্টি-রোল যুদ্ধবিমান, যা মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার বিভিন্ন সামরিক অভিযানে কার্যকারিতা প্রমাণ করেছে। প্রতিটি বিমানের দাম শত মিলিয়ন ডলারের বেশি, ফলে এই চুক্তি অর্থনৈতিক দিক থেকেও ব্যাপক গুরুত্ব বহন করে।
ফরাসি পক্ষ জানিয়েছে, রাফাল পরিচালনায় পাইলটদের দীর্ঘ প্রশিক্ষণ প্রয়োজন হলেও ইউক্রেন ইতিমধ্যেই মিরাজ বিমানে প্রশিক্ষিত হওয়ায় স্থানান্তর প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করা সম্ভব হবে। বিমান উৎপাদক দাসো অ্যাভিয়েশন নিশ্চিত করেছে যে ইউক্রেনকে সরবরাহের জন্য ফরাসি সেনাবাহিনীর বিদ্যমান বহরের ওপর চাপ পড়বে না এবং অন্যান্য ক্রেতাদের সরবরাহ পরিকল্পনাও অপরিবর্তিত থাকবে।
চুক্তিতে ড্রোন, ড্রোন আটকানোর প্রযুক্তি, গাইডেড বোমা ও নতুন প্রজন্মের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা যুক্ত হওয়ায় রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ও শীতকালীন অবকাঠামো হামলার বিরুদ্ধে ইউক্রেন আরও শক্তিশালী প্রতিরক্ষা গড়ে তুলতে পারবে। প্রথম দফা সরঞ্জাম তিন বছরের মধ্যে ইউক্রেনের হাতে পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে।
ফ্রান্স ও ব্রিটেনের নেতৃত্বে গঠিত বহুজাতিক নিরাপত্তা জোটের সঙ্গে ইউক্রেনের সহযোগিতাও জোরদার হচ্ছে, যা ভবিষ্যৎ কোনো সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতির পর শান্তি রক্ষায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে। তবে এই বিশাল প্রতিরক্ষা প্যাকেজের অর্থায়ন কীভাবে হবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। ইউক্রেন রাশিয়ার হিমায়িত সম্পদ ব্যবহারের দাবি জানালেও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি।
এই চুক্তির মাধ্যমে ইউক্রেন নিজস্ব আকাশ প্রতিরক্ষা ও যুদ্ধক্ষমতা নতুন মাত্রায় নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি স্পষ্ট করেছে।
