
অযোধ্যায় রামমন্দিরের নির্মাণ শেষের পর মঙ্গলবার প্রধান শিখরে বিশেষ গেরুয়া ধ্বজা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হল বহু প্রতীক্ষিত একটি পর্ব। কেন্দ্রীয় সরকারের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে দেশের নানা প্রান্ত থেকে আগত ভক্তদের ভিড়ে ভরে ওঠে মন্দির চত্ব্বর ও আশপাশের অঞ্চল। দীর্ঘদিনের অপেক্ষার পর এই অনুষ্ঠানকে ঘিরে ছিল দৃশ্যতই উৎসবের আবহ।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে জানান, দীর্ঘ শতকের যাত্রাপথ আজ একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিণতিতে পৌঁছল। তাঁর বক্তব্যে উঠে আসে অযোধ্যার সাংস্কৃতিক গুরুত্ব ও রামভক্তদের আস্থার ধারাবাহিকতার কথা। তিনি জানান, ঐতিহাসিক এই মুহূর্ত কেবল মন্দিরের নয়, সমগ্র দেশ ও বিশ্বজোড়া রামভক্তদের জন্য এক বিশেষ উপলক্ষ।
মন্দির কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রধান শিখরে উত্তোলিত ধ্বজাটি ত্রিভুজাকার, উচ্চতা ১০ ফুট এবং দৈর্ঘ্য ২০ ফুট। এতে রয়েছে স্বর্ণাভ সূর্যমুখী প্রতীক, ‘ওঁ’ চিহ্ন ও কোবীদার বৃক্ষের ছবি যা সাহস, সম্মান ও সাংস্কৃতিক ঐক্যের বার্তা বহন করে। রামমন্দির চত্বরে স্থাপিত অন্যান্য মন্দিরেও কলস ও ধ্বজাদণ্ড স্থাপন সম্পন্ন হয়েছে।
অযোধ্যা শহরজুড়ে অনুষ্ঠান উপলক্ষে সাজানো হয় প্রায় ১০০ টন ফুল দিয়ে। প্রশাসন জানায়, নিরাপত্তার ক্ষেত্রে নেওয়া হয়েছে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি। মোট ৬,৯৭০ জন নিরাপত্তাকর্মী মোতায়েন ছিল, যার মধ্যে এনএসজি স্নাইপার, এটিএস কমান্ডো, সাইবার ইউনিট ও বিশেষ প্রযুক্তিগত দল অন্তর্ভুক্ত। প্রতিটি প্রধান পথ ও মন্দির চত্বর পর্যবেক্ষণে রাখা হয় কড়া নজরদারির আওতায়।
শ্রীরাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্টের পক্ষ থেকে জানানো হয়, প্রধান মন্দির ছাড়াও একই পাঁচিল ঘেরা চত্বরে শিব, গণেশ, হনুমান, সূর্য, ভগবতী ও অন্নপূর্ণা মন্দির নির্মাণ শেষ হয়েছে। ২০২০ সালের ৫ অগস্ট ভূমি পুজো এবং ২০২৪ সালের ২২ জানুয়ারি গর্ভগৃহে রামলল্লার প্রণ প্রতিষ্ঠার পর এই ধ্বজা উত্তোলনকে মন্দির নির্মাণের সমাপ্তির প্রতীক হিসেবে দেখা হচ্ছে।
অযোধ্যা ও আশপাশের এলাকাজুড়ে এদিন বিশেষ ভক্ত সমাগম দেখা যায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শহরের পরিচিতি নতুন মাত্রা পেল। রামমন্দিরকে কেন্দ্র করে দেশের সাংস্কৃতিক ধারার নতুন অধ্যায় রচিত হল বলে মনে করছেন বহু বিশ্লেষক।
অবশেষে, বহু বছরের অপেক্ষা ও পথচলার পর অযোধ্যার রামমন্দিরে এই বিশেষ ধ্বজা উত্তোলন দেশবাসীর মনে এক ঐতিহাসিক দিনের স্মৃতি হিসেবে লেখা রইল।
