
দিল্লির বায়ুদূষণ আবারও আলোচনায়, সাম্প্রতিক সময়ে এক মার্কিনি নারী ও এক তরুণ ভারতীয় পেশাজীবীর অভিজ্ঞতা তা আরও স্পষ্ট করে তুলেছে। মার্কিনি কনটেন্ট ক্রিয়েটর ডানা ম্যারি তিন বছর ধরে দিল্লিতে ছিলেন। শহরটিকে ভালো লাগলেও শীতকালের দূষণ তার শিশুদের স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলায় তিনি পরিবারসহ ভারতে ফিরেও শেষ পর্যন্ত বেঙ্গালুরুতে স্থায়ী হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তুলনামূলকভাবে পরিষ্কার বাতাস, স্বাস্থ্যঝুঁকি কম থাকা এবং শিশুদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ এই তিন কারণ তাঁর সিদ্ধান্তকে সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত করে।
একই সময়ে আরেকটি গল্প উঠে এসেছে ২৪ বছর বয়সী মানিশার কাছ থেকে, যিনি ব্যস্ত শহুরে জীবন ছেড়ে মানালিতে নিজের মতো করে নতুন জীবন গড়ে তুলেছেন। কলকাতায় জন্ম নেওয়া এই তরুণী দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে স্নাতক শেষ করে দিল্লিতে দুটি বছর চাকরি করেছিলেন। পরে চাকরি পরিবর্তনের মাধ্যমে একটি রিমোট কর্মসংস্থানের সুযোগ পান এবং ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে পাহাড়ে চলে যান।
মানালিতে একা বসবাস করা মানিশার মতে, সেখানে জীবন সহজ নয়, তবে অনেক শান্ত। দূষণ কম থাকায় তাঁর দীর্ঘদিনের সাইনাস সমস্যাও বেশ নিয়ন্ত্রণে এসেছে। মাসিক খরচ গড়ে ২৫ হাজার টাকার মতো, যার মধ্যে ভাড়া ১৫ হাজার এবং বাকি খরচ ইন্টারনেট, বিদ্যুৎ ও খাবারে যায়। প্রতিদিন হাঁটাহাঁটি বাড়ায় তাঁর শরীরও আরও সুস্থ হয়েছে। মানালির জীবনযাত্রা তুলনামূলক সাশ্রয়ী হওয়ায় তিনি নিয়মিতভাবে সঞ্চয়ও করতে পারছেন।
দিল্লির দূষণ সমস্যা এ দুই ভিন্ন অভিজ্ঞতার কেন্দ্রে। কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের তথ্য বলছে, দিল্লির এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স বা একিউআই অনেক দিন ধরেই বিপজ্জনক মাত্রায়, যা দীর্ঘমেয়াদী শ্বাসকষ্টের ঝুঁকি বাড়ায়। বিপরীতে বেঙ্গালুরু ও মানালির মতো জায়গায় পরিস্থিতি তুলনামূলক স্থিতিশীল। ফলে অনেকেই ভালো পরিবেশ, স্বাস্থ্য ও মানসিক শান্তির খোঁজে বড় শহর ছাড়ার কথা ভাবছেন।
