
রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের দফতর থেকে ছ’মাস আগে প্রয়াত তৃণমূল বিধায়ক তাপস সাহা এবং হাইকোর্টের রায়ে সদ্য বিধায়কপদ খোয়া-ওয়া মুকুল রায়ের উদ্দেশে শুভেচ্ছাবার্তা পাঠানোকে কেন্দ্র করে রাজ্যের রাজনৈতিক অঙ্গনে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। দায়িত্বের তিন বছর পূর্তি উপলক্ষে মুখ্যমন্ত্রী, মন্ত্রিসভা ও সকল বিধায়ককে অভিনন্দন জানাতে পাঠানো চিঠির তালিকায় দুই অযোগ্য ব্যক্তির নাম উঠে আসায় রাজভবনের প্রশাসনিক ত্রুটি স্পষ্ট হয়ে পড়েছে।
চিঠি বিধানসভায় পৌঁছতেই জানা যায়, প্রয়াত তাপস সাহার দীর্ঘায়ু কামনা করা হয়েছে এবং মুকুল রায়কে এখনও উত্তর কলকাতার বৈধ বিধায়ক হিসেবে উল্লেখ করে শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে। অথচ তাপস সাহার মৃত্যু হয়েছে ১৫ মে এবং ১৩ নভেম্বর আদালত মুকুলের বিধায়কপদ বাতিল করেছে। বিধানসভায় এই ভুলকে সাংবিধানিক দফতরের অগ্রহণযোগ্য অবহেলা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
বিধানসভা সচিবালয় ও আইনমহলের মতে, রাজভবনের সঙ্গে বিধানসভার নিয়মিত যোগাযোগ থাকা সত্ত্বেও এমন ত্রুটি নজিরবিহীন। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ধারণা রাজ্যপালের মতো উচ্চপদস্থ সাংবিধানিক কর্তৃত্বের দফতরে এ ধরনের ভুল প্রশাসনিক শৃঙ্খলা বজায় রাখার প্রশ্নেই বড়সড় প্রশ্নচিহ্ন।
সমালোচনার মাঝে রাজভবন দাবি করেছে, এই ভুল ইচ্ছাকৃতভাবে ঘটানো হতে পারে। রাজ্যপালের নির্দেশে চিফ অফ স্টাফ এস কে পট্টনায়েককে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। চিঠি পাঠানোর প্রক্রিয়ায় কে বা কারা দায়ী, তা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সূত্রের খবর, বুধবার কলকাতায় ফিরে রাজ্যপাল ঘটনাটি জানতে পেরে ক্ষুব্ধ হন। ভবিষ্যতে তাঁর স্বাক্ষরযুক্ত প্রতিটি চিঠি নির্দিষ্ট অনুমোদন প্রক্রিয়া অতিক্রম করেই পাঠানো হবে এমন সিদ্ধান্ত ইতিমধ্যেই নেওয়া হয়েছে। রাজনৈতিক মহলের মতে, মৃত ও পদচ্যুত বিধায়কের নামে শুভেচ্ছাপত্র পাঠানোর ঘটনা রাজ্যের সাম্প্রতিক প্রশাসনিক ইতিহাসে বিরল এবং রাজভবনের মর্যাদাকেও প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে।
