
ক্ষতিপূরণ নয়, স্থায়ী পুনর্বাসনের দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠল জলপাইগুড়ি জেলাশাসকের দফতর চত্বর। উত্তরবঙ্গের ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত দুই ব্লক ধুপগুড়ি ও ময়নাগুড়ির একাধিক গ্রামের বাসিন্দারা সোমবার সকালে মিছিল করে হাজির হন জেলা প্রশাসনের দরজায়। গধেয়ারকুঠি, আমবাড়ি সহ বিভিন্ন গ্রামের প্রায় শতাধিক মানুষ দাবি তুলেছেন দ্রুত পুনর্বাসনের পাশাপাশি এলাকার বাঁধ নির্মাণের। ফলে প্রশাসনিক ভবনের সামনে তৈরি হয় উত্তেজনা, যাতে নিয়ন্ত্রণ রাখতে মোতায়েন ছিল কোতোয়ালি থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী।
গত ৪ঠা অক্টোবরের বন্যায় উত্তরবঙ্গের বহু জায়গা কার্যত বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। বাড়িঘর ভেসে যায়, কয়েক ঘণ্টার মধ্যে জমি ডুবে যায় জলে, নষ্ট হয় বহু পরিবার의 জীবিকা। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহায়তার ঘোষণা করা হয়। যেসব পরিবারের বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাদের ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে বলে প্রশাসন জানায়। এছাড়া যাদের চাষের জমি ও ফসল নষ্ট হয়েছে, তারাও আর্থিক সাহায্যসহ কৃষি সরঞ্জাম পেয়েছেন।
তবে এদিনের বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, এই আর্থিক সহায়তা বাস্তব ক্ষতির তুলনায় অনেক কম। অনেকে জানান, পুরো ঘর ভেঙে যাওয়ার পর মাত্র এক লক্ষ টাকায় নতুন করে থাকার জায়গা তৈরি করা সম্ভব নয়। ফসল নষ্ট হওয়ায় বছরের সারা আয় ভেসে গেছে জলে। শুধু ক্ষতিপূরণ দিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা যাবে না বলেই দাবি তাঁদের।
ক্ষুব্ধ বাসিন্দাদের বক্তব্য, এলাকার নদী ও খালের বাঁধ বহুদিন ধরে অরক্ষিত। তাই প্রতি বছর একই পরিস্থিতির শিকার হতে হচ্ছে। দ্রুত স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ ও নিরাপদ আবাসনের ব্যবস্থা না হলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে বলে দাবি তাঁদের। তাই একমাত্র সমাধান পুনর্বাসন এই স্লোগানেই জেলাশাসকের দফতরের সামনে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠেন বন্যাদুর্গতরা। প্রশাসন দাবিগুলি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে।
