নিজ দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে এক ভার্চুয়াল বৈঠকে আবেগঘন বক্তব্য রাখলেন শেখ হাসিনা। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে চলা আলোচনায় দলের কর্মীরা জানালেন, কীভাবে সরকার পরিবর্তনের পর থেকে তাঁদের পরিবার ও স্বজনরা নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন। সবার কথা মনোযোগ দিয়ে শোনার পর হাসিনা জানালেন, “এই অবিচারের শেষ হবে। আমি ফিরছি, ন্যায় ফিরিয়ে আনতেই।”
গত বছরের শেষ ভাগে, আগস্ট মাসে, ক্ষমতা হাতছাড়া হওয়ার পর দেশ ত্যাগ করেন শেখ হাসিনা। তবে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে একটুও বিচ্যুত হননি। দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়মিত ভার্চুয়াল মাধ্যমে যুক্ত থেকে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। সোমবার রাতে ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগের উদ্যোগে এক ভার্চুয়াল সভায় অংশ নিয়ে তিনি বলেন, “যারা জনগণের ওপর অন্যায় করছে, তাদের কোনো ছাড় নেই। শহিদ পরিবারের কষ্ট আমি হৃদয় দিয়ে অনুভব করি—এই অন্যায়ের বিচার হবেই, ইনশাআল্লাহ।”
এই আলোচনায় বর্তমান পরিস্থিতিকে তার সরকার আমলের সঙ্গে তুলনা করে শেখ হাসিনা স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “আমরা প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে এমন ব্যবহার করিনি।” আলোচনায় নোবেল বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি তীব্র আক্রমণ শানিয়ে তিনি তাকে ‘শক্তি লোভী’ ও ‘শোষণকারী’ বলে অভিহিত করেন।
সরকার পরিবর্তনের পর দেশের রাজনীতিতে নতুন করে তৎপর হয়ে উঠেছে বিএনপি ও অন্যান্য বিরোধী রাজনৈতিক শক্তিগুলো। সামনে সম্ভাব্য জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে দলগুলো নানাভাবে সাংগঠনিক কার্যক্রম জোরদার করছে। রাজনৈতিক মাঠে আবারও উত্তাপ ছড়াচ্ছে।
এরই মাঝে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পাল্টা কর্মসূচি শুরু হয়েছে। দলটির নেতাকর্মীরা রাজপথে অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। বিশেষ করে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে চলমান মামলাগুলো ঘিরে দলের মধ্যে ক্ষোভ বেড়েই চলেছে। অনেকেই মনে করছেন, এসব আইনি প্রক্রিয়া রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অংশ। ফলে কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ও উত্তেজনা দুই-ই বৃদ্ধি পাচ্ছে।
পরিস্থিতি যত এগোচ্ছে, রাজনীতির মোড়ও ততটাই ঘুরছে। আওয়ামী লীগ নিজেদের অবস্থান শক্ত করতে চাইছে, অন্যদিকে বিরোধী শিবির চাইছে ক্ষমতার পালাবদল নিশ্চিত করতে। রাজনৈতিক অঙ্গনে এখন চলছে চাপা উত্তেজনা, যার কেন্দ্রে রয়েছেন শেখ হাসিনা ও তাঁর নেতৃত্বাধীন দল।