পরিতোষ সাহা : বীরভূম
বছর ঘুরলেই বিধানসভা নির্বাচন।নির্বাচনে জোর টক্কর দিতে বিজেপি এখন থেকেই মাটি প্রস্তুত করতে নেমেছে।নতুন ভাবে তৈরি সক্রিয় সদস্যদের তালিম দিতে শুরু করেছে বিজেপি।বিজেপির বীরভূম সাংগঠনিক জেলার বিজেপির কর্তারা ইতিমধ্যেই জেলার সাতটি বিধানসভাকে লক্ষ্য করে আসরে নেমে পড়েছে।ইতিমধ্যেই বীরভূম জেলার মুরারই,নলহাটি,হাঁসন,রামপুরহাট,সাঁইথিয়া,সিউড়ি,দুবরাজপুর বিধানসভায় সক্রিয় সদস্য সংখ্যা ১লক্ষ ১২ হাজার।এই সক্রিয় সদস্য সংখ্যার কাজ গতবছর ৩ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু করেছে। সেই সময় থেকে চলতি বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত এই সক্রিয় সদস্য সংখ্যা ১ লাখ ছাড়িয়েছে।এখনও পর্যন্ত সক্রিয় সদস্য সংখ্যার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বিজেপি।যা দেখে প্রহর গুনতে শুরু করেছে শাসক তৃণমূল।
বিজেপি সুত্রে খবর,বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশ অনুযায়ী, ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনকে লক্ষ্য রেখে সক্রিয় সদস্য সংখ্যা সংগ্রহের কাজে নেমেছিল।২০২৪, সেপ্টেম্বর থেকে এই কাজ শুরু হয়।মাত্র সাত মাসেই জেলার সাতটি বিধানসভা ক্ষেত্রে সক্রিয় সদস্য সংখ্যা ১ লাখ ছাড়িয়েছে। এখনও পর্যন্ত সেই কাজ চালিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।স্বভাবতই বেশ উজ্জীবিত বীরভূম সাংগঠনিক জেলার বিজেপি নেতৃত্ব।এই সমস্ত সদস্যদের তালিম দিতে ইতিমধ্যেই রাজ্য ও জেলার নেতারা আসরে নেমেছে।এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ থেকেই প্রতিটি বিধানসভায় গিয়ে নতুন সক্রিয় সদস্যদের ক্লাস নিচ্ছে বিজেপির রাজ্য ও জেলার নেতারা।ইতিমধ্যেই,সাতটি বিধানসভার মধ্যে সিউড়ি,রামপুরহাট,দুবরাজপুর ও সাঁইথিয়া বিধানসভায় বিজেপির সক্রিয় সদস্য সংখ্যার ফলাফল বেশ ভালো।তুলনায় হাঁসন,নলহাটি ও মুরারই বিধানসভায় সক্রিয় সদস্যা আগের তুলনায় বাড়লেও,তেমনভাবে আশাব্যঞ্জক নয়।ছাব্বিশের নির্বাচনের আগে তা ঠিক হয়ে যাবে বলে মনে করছেন বিজেপি নেতৃত্ব।
পরিসংখ্যান বলছে,বীরভূম সাংগঠনিক জেলার সাতটি বিধানসভায় ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের যা ফল তার নিরিখে সিউড়ি বিধানসভায় বিজেপির ভোট শতাংশ বেড়েছে ২৯.২২%,তৃণমূলের ভোট শতাংশ বেড়েছে মাত্র ১.১২%।২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে একমাত্র দুবরাজপুর বিধানসভা বিজেপির দখলে।এই বিধানসভায় গত নির্বাচনে বিজেপির ভোট শতাংশ বেড়েছে ৩৪.০৯%,সেই নির্বাচনে শাসক তৃণমূলের ভোট কমেছে ৫.৬৭%।সাঁইথিয়া বিধানসভায় বিজেপির ভোট বেড়েছে ৩০.৮৪%,তুলনায় তৃণমূলের ভোট কমেছে ২.৩৩%।রামপুরহাট বিধানসভায় বিজেপির ভোট বেড়েছে ৩১%,শাসক তৃণমূলের ভোট বেড়েছে মাত্র ৩.৭০%।হাঁসন বিধানসভায় বিজেপির ভোট বেড়েছে ২২.৮৭%,তৃণমূলের ভোট বেড়েছে ৮.৭৭%।নলহাটি বিধানসভায় বিজেপির ভোট বেড়েছে ১৮.৮০%,তৃণমূলের ভোট বেড়েছে ১১.২১%।মুরারই বিধানসভায় বিজেপির ভোট বেড়েছে ১৮.৯৬%,তৃণমূলের ভোট বেড়েছে ১৯.২৫%। ফলে ছাব্বিশের নির্বাচনের আগে বিজেপি তাদের লালমাটিকে আরও শক্ত করতে মাঠে নেমে পড়েছে।
তৃণমূলের এক জেলা নেতা বলেন,এই পরিসংখ্যানই আমাদের ভয়ের কারণ।২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে অনুব্রত মণ্ডলের নেতৃত্বেই ভোট হয়েছিল।কিন্তু ২০২৬ বিধানসভা নির্বাচনে পরিস্থিতি অন্যরকম।তৃণমূলের অন্দরের বিভাজন,সদ্য যোগ্য শিক্ষকদের চাকরি বাতিল।এরপর এখনো অনেক সময় বাকী।এর মাঝে আরও কত কী হতে পারে।সবকিছুই ভোট বাক্সে প্রভাব ফেলবে।তাই কিছুটা হিন্দু ভোট টানতে এবার তৃণমূল রামনবমীতে নেমেছে।পাশাপাশি নেত্রী ডেউচা-পাঁচামী কয়লা প্রকল্ল নিয়ে যে স্বপ্ন দেখছেন।তাতে যদি কিছুটা ভোট তৃণমূলের দিকে ফিরে আসে।কারণ,মমতা ব্যানার্জির জন্মস্থান বীরভূম।সেই জেলায় যদি শাসক তৃণমূলের ফল খারাপ হয়।তা নেত্রীর কাছে লজ্জার।তাই জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব এখন বেশে উদ্বিগ্নে।কী হয়,কী হয়,কী জানি, কী হয় গোছের।