মুর্শিদাবাদের সীমান্তবর্তী অঞ্চলের পরিস্থিতি এমন এক জায়গায় পৌঁছেছে, যেখানে বাসিন্দারা নিজেদের জীবনকে বারবার প্রশ্ন করতে বাধ্য হচ্ছিলেন। দিনের আলো নিভে গেলেই এলাকা জুড়ে নেমে আসত অজানা আতঙ্ক। রাত পোহাতে না পোহাতেই শুরু হত চোরাচালান, গরু পাচার কিংবা অবৈধ কার্যকলাপের নানা ছক। এই ভয়াবহ অবস্থায় শেষমেশ তাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে সীমান্ত রক্ষা বাহিনী, BSF।
গত কয়েকদিনে এই এলাকার পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠছিল। মানুষজন পুলিশি সাহায্যের আশায় দিন গুনছিলেন, প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু বাস্তবতায় পরিবর্তনের ছোঁয়া মিলছিল না। অবশেষে BSF-র আগমন যেন তাদের কাছে আশার আলো হয়ে উঠেছে।
এলাকার বাসিন্দারা স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, তাঁরা বহুদিন ধরে চোরাচালান এবং পাচার চক্রের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুললেও কোনও কার্যকর প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। সীমান্ত লাগোয়া গ্রামগুলোতে রাত হলেই গরু পাচারের কুচকাওয়াজ শুরু হত, স্থানীয় যুবকরা নানা লোভনীয় টাকার প্রলোভনে জড়িয়ে পড়ত বেআইনি কাজে। এতে করে গ্রামে শান্তি তো হারিয়েই যায়, বরং নতুন প্রজন্মের ভবিষ্যৎও অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে।
BSF-এর নিয়মিত টহলদারি শুরু হতেই মানুষ কিছুটা হলেও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন। তাঁদের বক্তব্য, “আর পারছি না! আমাদের যেন বাঁচান।” এই আকুতি এখন বদলে যাচ্ছে সাহস ও প্রত্যয়ের বার্তায়। তাঁদের বিশ্বাস, BSF-এর সক্রিয় ভূমিকায় এই সব বেআইনি কার্যকলাপ ধীরে ধীরে বন্ধ হবে।
BSF-এর এক আধিকারিক জানিয়েছেন, সীমান্ত এলাকায় শান্তি ফিরিয়ে আনাই তাঁদের লক্ষ্য। স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে হাত মিলিয়ে তাঁরা কাজ করছেন এবং ভবিষ্যতে এই অঞ্চল থেকে চোরাচালান পুরোপুরি নির্মূল করতে চান।
এখন প্রশ্ন উঠছে, এই উদ্যোগ কতটা দীর্ঘস্থায়ী হবে? কেন এতদিন এই এলাকায় নজর দেওয়া হয়নি? তবে সাধারণ মানুষ এখন অতীত ভুলে, আগামী দিনের আশায় বুক বাঁধছেন। তাঁদের একটাই প্রার্থনা—“শান্তি চাই, স্বাভাবিক জীবন চাই”।
BSF-এর এই পদক্ষেপ যদি স্থায়ী হয়, তবে সীমান্তবর্তী মুর্শিদাবাদে দীর্ঘদিন পরে আবারও শোনা যাবে শিশুদের হাসি, সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে আতঙ্ক নয়, ফিরবে ঘরের আলো। মানুষ বাঁচবে, সমাজও বাঁচবে।