গুজরাট টাইটান্স যখন ব্যাট হাতে নামল, তখন যেন ঠিক করে এসেছিল প্রথম বল থেকেই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে নেবে। ওপেনারদের ঝড়ো শুরুতেই বদলে গেল ম্যাচের মেজাজ। একের পর এক বাউন্ডারি ও ছক্কায় প্রতিপক্ষের বোলিং আক্রমণকে ছিন্নভিন্ন করে দিলেন ব্যাটাররা। রানের গতি কখনও কমেনি, বরং মাঝের ওভারগুলোতে আরও জোরালো হয়ে উঠল গুজরাটের ইনিংস।
উইকেট কিছু পড়লেও আক্রমণাত্মক মনোভাব বজায় রেখে শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে জমিয়ে ফেলে ১৮০ রানের শক্তপোক্ত স্কোর। ব্যাট হাতে গুজরাটের এমন ঝাঁঝালো পারফরম্যান্সে প্রথম ইনিংসেই চাপে পড়ে যায় প্রতিপক্ষ দল। এই দৃঢ় ইনিংস দেখাল, কতটা প্রস্তুত ছিল গুজরাট টাইটান্স শনিবার।
মনে হচ্ছিল, রানতাড়ার দুঃস্বপ্ন অপেক্ষায়। কিন্তু না! লখনউ সুপারজায়ান্টস যেন নামল হঠাৎ বোল্ড হওয়া চিত্রনাট্যটা নতুন করে লেখার সংকল্প নিয়ে।
ঋষভ পন্থ যেন হঠাৎই চমক হয়ে এলেন লখনউয়ের ইনিংসের শুরুতে। ওপেন করতে নামার সিদ্ধান্তে দর্শক থেকে ধারাভাষ্যকার—সবাই চমকে গিয়েছিলেন। শুরুটা ছিল দারুণ ছন্দে, গিলের সঙ্গে মিলিয়ে গুজরাটের বোলারদের ভালোই চাপে ফেলেছিলেন দুজনে।
কিন্তু ঠিক যখন ছন্দ জমছে, তখনই সিরাজ দিলেন ধাক্কা। মাত্র ৬ রানে থাকা অবস্থায় একটা সহজ ক্যাচ ফসকে যায়, সোনার সুযোগ হাতছাড়া করে গুজরাট। কিন্তু দ্বিতীয়বার আর ভুল হয়নি—শেষমেশ ১৮ বলে ২১ রান করেই প্যাভিলিয়নে ফেরেন পন্থ।
তার আগেও যদিও তাঁর ব্যাট থেকে ঝরেছে দুই চার আর একটা ছক্কা, যা ইনিংসের টেম্পোটা শুরুতেই চাঙ্গা করে দিয়েছিল।
সপ্তম উইকেটে যখন সবাই আশা হারাচ্ছে, তখন ব্যাট হাতে দুরন্ত তাণ্ডব শুরু করেন পুরান ও মার্করাম। একের পর এক স্ট্রোক—মনে হচ্ছিল, দু’জনেই যেন মাঠে আগুন ধরাতে নেমেছেন। মার্করামের ব্যাট থেকে আসে ঝকঝকে ৫৮ রান, আর অন্য প্রান্তে পুরান ৬১ রানে ঝড় তুললেন।
ম্যাচ গড়াল ক্লাইম্যাক্সে, আয়ুষ বাদোনির আগমনে বদলে গেল ছবিটা। ১৮.৪ ওভার শেষে লখনউ সুপার জায়ান্টসের স্কোরবোর্ডে জমা হয় ১৭৪ রান। তখনও জয়ের জন্য দরকার ছিল হাতে গোনা কিছু রান। কিন্তু শেষটা আর টানাপোড়েনে গড়ায়নি। একেবারে হিসেবি খেলায় ১৯.৩ ওভারেই ম্যাচ নিজের করে নেয় লখনউ। ধীরে নয়, দারুণ ছন্দে এগিয়ে গিয়ে সঠিক সময়েই তুলে নেয় জয়ের ফিনিশিং লাইন।
মাঠজুড়ে তখন উল্লাস, গ্যালারিতে হাততালি। গুজরাটের বোলাররা ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করলেও লখনউয়ের ব্যাটাররা সে রাস্তা বন্ধ করে দেন বুঝে শুনেই। একের পর এক স্ট্রোক আর বুদ্ধিদীপ্ত ব্যাটিংয়ে শেষ ওভার শুরুর আগেই লখনউ বুঝিয়ে দেয়, আজ জয়ের দিন তাঁদেরই।