ভারতের চার দিনের সফরে এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে আলাদা করে বৈঠক করলেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স।এই বৈঠক এমন এক সময়ে হচ্ছে যখন ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্ত করার জন্য উন্নত পর্যায়ের আলোচনায় রয়েছে, যা উভয় দেশের জন্যই লাভজনক হবে।এই বৈঠকের পর প্রতিনিধি দলের স্তরে আলোচনা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ভারতীয় পণ্যের উপর ১০% শুল্কের উপর অতিরিক্ত ২৬% শুল্ক আরোপ করেছেন।তবে বর্তমানে নতুন ‘পারস্পরিক’ শুল্ক ৯০ দিনের জন্য ‘স্থগিত’ রেখেছেন।
হোয়াইট হাউস জানিয়েছে যে, ট্রাম্প প্রশাসন ভারতের সঙ্গে সম্পর্ককে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে রেখেছে।ওয়াশিংটন দিল্লির সঙ্গে এমন একটি বাণিজ্য চুক্তি করতে আগ্রহী, যা বিশ্বের বৃহত্তম পণ্য উৎপাদনকারী দেশ চিনের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধের ধাক্কা কিছুটা কমাতে পারে।তবে ভারত স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, তারা কোনো চুক্তির জন্য তাড়াহুড়ো করবে না। আবার ‘বন্দুকের মুখে’ চুক্তি করতেও বাধ্য হবে না।নয়া দিল্লি জানিয়েছে, একটি চুক্তি তখনই হবে যখন তা ভারতের প্রয়োজনীয়তাকে গুরুত্ব দেবে।
ভারত মনে করছে যে বাণিজ্য চুক্তিটি শরৎকালের মধ্যে হওয়ার কথা থাকলেও জুলাইয়ের শেষ নাগাদ তা সম্পন্ন করার জন্য অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। ব্লুমবার্গের প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী মোদি ও জেডি ভ্যান্সের বৈঠকের পর এই সপ্তাহেই নির্দিষ্ট খাতে বাণিজ্য আলোচনা হবে বলে জানা গেছে। মে মাসের শেষ নাগাদ বাণিজ্য আলোচনা শেষ করার জন্য একটি নতুন লক্ষ্য নির্ধারণ করা হতে পারে।
প্রযুক্তি, উৎপাদন, অটোমোবাইল ও শক্তি ক্ষেত্রে আমেরিকা থেকে বিনিয়োগ বৃদ্ধির দিকেও নজর রাখছে ভারত। গত সপ্তাহেই টেসলা ও স্টারলিংকের মালিক এলন মাস্কের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।এই বছরের শেষের দিকে মাস্ক ভারতে আসতে পারেন।টেসলা, স্পেসএক্স বা স্টারলিংকের মতো কোম্পানিগুলো এখনও ভারতীয় বাজারে না থাকলেও এর ফলে প্রবেশের সম্ভাবনা নিশ্চিত হতে চলেছে বলেই মনে করছেন অনেকে।আবার মার্কিন কোম্পানিগুলো ল্যাপটপ, ট্যাবলেট ও মোবাইলের মতো গ্যাজেটের উৎপাদন বাড়াতে ভারতে বিনিয়োগের লক্ষ্য রাখছে।গত মাসেই ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে অসামরিক পরমাণু সহযোগিতায় একটি বড় অগ্রগতি হয়েছে। মার্কিন শক্তি বিভাগ একটি মার্কিন কোম্পানি হোলটেক ইন্টারন্যাশনালকে ভারতের মধ্যে পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র ডিজাইন ও নির্মাণের জন্য চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে। তবে এই শক্তি কোম্পানির মালিক ও প্রচারক হলেন ভারতীয়-মার্কিন উদ্যোক্তা কৃষ্ণা পি সিং।
জানা যাচ্ছে আইএমএফ-এর একটি বৈঠকে অংশ নিতে শীঘ্রই ওয়াশিংটনে যাবেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন।সেখানে মার্কিন কর্তাদের সঙ্গে উচ্চস্তরের আলোচনা করে ভারত-মার্কিন বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্ত করতে পারেন তিনি।
Leave a comment
Leave a comment