দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি
শখের আমবাগানে এবার ব্রুনাই কিং আমের ফলন আগামী দিনে আম চাষিদের নতুন দিশা দেখাবে। সম্প্রতি পান্ডুয়ার বেনেপাড়ায় শিক্ষক পার্থ দের বাড়ির বাগানে ব্রুনাই কিং জাতের আমের ফলন রীতিমতো তাক লাগিয়েছে। শিক্ষকতার পাশাপাশি পার্থবাবুর শখ ফলের বাগান করা। নিজের বাড়িতে নিজের হাতে লাগানো গাছের ফল খাওয়ার আনন্দই আলাদা। নিজে যেহেতু আম খেতে ভীষণ ভালোবাসেন তাই দেশ বিদেশের প্রায় ২৫ রকম প্রজাতির আম গাছ লাগিয়েছেন পার্থবাবু। এইসব প্রজাতির মধ্যে ইয়েলো আইভরি, ব্যানানা ম্যাংগো, কেন্ট চ্যাং মাই, ব্রুনাই কিং এর মত আম গাছও রয়েছে। এছাড়া শখের এই বাগানে আম ছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির কাঁঠাল সবেদা জামরুল লিচুর মতো গাছ। গত বেশ কয়েক বছর ধরে এই ফলের গাছের পরিচর্যা করছেন ওই শিক্ষক। এই বছর তার বাগানের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ ওই ব্রুনাই কিং প্রজাতির আম। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বড় প্রজাতির এই আমের বৈশিষ্ট্য হল এর খোসা পাতলা এবং এর ভিতর ফাইবার থাকে না। এই প্রজাতির আম খেতে যেরকম মিষ্টি সেরকম সুস্বাদুও। আকার এবং ওজনেও এই আম অনেকটাই বড়। পাকা অবস্থায় এক একটা আমের ওজন প্রায় চার থেকে সাড়ে চার কেজি পর্যন্ত হয়।
পার্থ বাবু জানান বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে দিন দিন গরম বাড়ছে। তাই তিনি একসময় স্থির করেন যে বাড়িতেই ফলের বাগান করবেন। তাতে একদিকে গাছের ফলও খাওয়া হবে, অন্যদিকে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় থাকবে। আর এই ফলের গাছ করার শখ এখন তার কার্যত নেশায় পরিণত হয়েছে। রকমারি ফলের বাগানে এখন সারা বছর ধরেই কোনো না কোনো ফল ফলে থাকে। মেদিনীপুর থেকে ব্রুনাই কিং প্রজাতির আমের চারা এনে তিনি তার বাগানে লাগান। এছাড়া হাওড়ার একটা নার্সারি থেকেও বেশ কিছু ফলের গাছের চারা এনে বাগানে বসিয়েছিলেন। এই ফলের বাগান করতে গিয়ে ইতিমধ্যেই ওই শিক্ষক লক্ষাধিক টাকা চারা গাছ কিনতে ব্যয় করেছেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি অবসর সময়ে তিনি নিজেই জৈব সার তৈরি করে সেই সার দিয়ে গাছের পরিচর্যা করেন। কিন্তু সেই সব গাছের মধ্যে মেদিনীপুর থেকে আনা ব্রুনাই কিং প্রজাতির আমের ফলন রীতিমতো চমকে দিয়েছে। গাছ ভরে এখন আম হয়েছে। কাঁচা অবস্থাতেই এক একটা আমের ওজন প্রায় তিন কেজির সমান। পাকার পর এই আমের ওজন যে আরও বাড়বে তা নিঃসন্দেহে বলা যায়। পার্থ বাবু নিজে যেরকম ফল খেতে ভালোবাসেন সেরকম পাড়া-প্রতিবেশীদের ফল খাইয়েও আনন্দ পান। তিনি বলেন তার প্রতিবেশীরা খুবই ভালো, কেউ তার বাগানের ফল চুরি করে নিয়ে যায় না। তারা তাকে জিজ্ঞাসা করে বাগানের ঢুকে আনন্দ করে ফল খান। নিজে খাওয়ার আনন্দ থেকে প্রতিবেশীদের খাইয়ে অনেক বেশি আনন্দ পান পার্থ বাবু। বর্তমানে এই আমের ফলন দেখতেও এলাকার অনেক মানুষই ওই শিক্ষকের বাড়িতে ভিড় জমাচ্ছেন।
Leave a comment
Leave a comment