ইউপিআই এ বার আরও ফাস্ট! ভারতে এখন ইউনিফায়েড পেমেন্ট ইন্টারফেস বা ইউপিআই-এর মাধ্যমে টাকা পাঠানো, রিসিভ করা কিংবা অ্যাকাউন্ট ব্যালেন্স চেক করা আগের তুলনায় হবে অনেক দ্রুত। জাতীয় পেমেন্ট কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়ার নতুন নির্দেশিকা সোমবার, ১৬ জুন থেকে কার্যকর। নতুন নিয়মে, এখন থেকে যে কোনও ইউপিআই লেনদেন মাত্র ১০ থেকে ১৫ সেকেন্ডের মধ্যেই শেষ হবে।
আগে ইউপিআই-র মাধ্যমে টাকা পাঠাতে বা রিফান্ড পেতে প্রায় ৩০ সেকেন্ড পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হত। কিন্তু এখন সেই সময় কমে এসেছে প্রায় অর্ধেকেরও কমে। ফোন পে, গুগল পে, পেটিএম-এর মতো জনপ্রিয় ইউপিআই প্ল্যাটফর্মে এই পরিবর্তন কার্যকর হবে। একই সঙ্গে ব্যালেন্স চেক করলেও দ্রুত ব্যালেন্স দেখা যাবে। যদি কোনও কারণে লেনদেন ব্যর্থ হয়, তাহলেও এখন আর ৩০ সেকেন্ড অপেক্ষা করতে হবে না। মাত্র ১০ সেকেন্ডের মধ্যেই ব্যবহারকারীরা জানতে পারবেন টাকা কেটে গেছে, নাকি ফেরত এসেছে। এমন কি যদি নেটওয়ার্ক সমস্যার কারণে কোনও লেনদেন ইউপিআই সিস্টেমে পৌঁছাতে না পারে, তবে সেটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ‘ফেল’ হিসাবে গণ্য হবে।
পেন্ডিং লেনদেনের স্ট্যাটাস জানার ক্ষেত্রেও এল বড় পরিবর্তন। আগে যে সব অ্যাপ ও ব্যাঙ্ককে কোনও পেন্ডিং ট্রান্সাকশনের আপডেট জানতে ৯০ সেকেন্ড পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হত। এখন মাত্র ৪৫-৬০ সেকেন্ডের মধ্যেই তথ্য মিলবে। তবে সিস্টেমে যাতে অতিরিক্ত চাপ না পড়ে, সে জন্য এনপিসিআই জানিয়েছে, একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে একটি লেনদেনের স্ট্যাটাস সর্বাধিক তিন বার চেক করা যাবে। আরও একটি বড় পরিবর্তন এসেছে ব্যালেন্স চেকের নিয়মে। এখন থেকে একজন ব্যবহারকারী দিনে সর্বাধিক ৫০ বার পর্যন্ত ব্যালেন্স চেক করতে পারবেন। আগে এর কোনও নির্দিষ্ট সীমা ছিল না। এই সীমা চালু করা হয়েছে সার্ভারের ওপর চাপ কমানোর জন্য।
নিরাপত্তার বিষয়টিতেও জোর দিয়েছে এনপিসিআই। ইউপিআই লেনদেনের সময় অ্যাপে শুধুমাত্র প্রকৃত উপভোক্তার নামই দেখা যাবে। অর্থাৎ, পেমেন্টের সময় ইউজাররা ‘বেনিফিশিয়ারি নেম’ নিজে থেকে আর পরিবর্তন করতে পারবেন না। এই নতুন নিয়ম ৩০ জুনের মধ্যে সব ব্যাংক এবং ইউপিআই অ্যাপগুলিকে বাধ্যতামূলকভাবে কার্যকর করতে হবে। এর ফলে প্রতারণা কমবে এবং বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ২০২৫ সালের মে মাসে ভারতে মোট ১,৮৬৮ কোটি ইউপিআই লেনদেন হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৩৩ শতাংশ বেশি। মোট ট্রান্সাকশনের আর্থিক মূল্য ছিল ২৫.১৪ লক্ষ কোটি টাকা। এত বিশাল লেনদেনের পরিসংখ্যানের মাঝে এই নতুন আপডেট সাধারণ মানুষকে আরও দ্রুত, নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য ডিজিটাল পরিষেবা দেবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।