পহেলগাম কাণ্ডের পর ‘অপারেশন সিঁদুর’। যার কোনও জবাব ছিল না পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর কাছে। তার পর পাকিস্তান যুদ্ধবিরতির কাতর আর্জি নিয়ে কার্যত ভারতের কাছে আত্মসমর্পণ করে। সেই সময় আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, দু’দেশের মধ্যে উত্তেজনা এমন পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল যে, যে কোনও সময় পরমাণু যুদ্ধ শুরু হয়ে যেতে পারে। যদিও ভারতের বিদেশমন্ত্রক জানিয়ে দেয়, এমন কোনও হুমকি কোনও পক্ষই দেয়নি। তবে পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডারে পাল্লা ভারী কোন দেশের, সে নিয়ে সম্প্রতি রিপোর্ট প্রকাশ করল ‘স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট’ বা সিপরি।
রিপোর্ট অনুযায়ী, পাকিস্তানের থেকে বেশি পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে ভারতের কাছে। তবে ধরাছোঁয়ার বাইরে চিন। জিনপিংয়ের দেশের কাছে ভারতের প্রায় তিন গুণ পারমাণবিক অস্ত্র মজুত রয়েছে। সোমবারই সিপরির তরফে ২০২৫ সালের ইয়ারবুক প্রকাশ করা হয়েছে। সেই রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালের জানুয়ারির পরিসংখ্যান অনুযায়ী ভারতের কাছে রয়েছে ১৮০টি নিউক্লিয়ার ওয়ারহেড। পাকিস্তানের কাছে প্রায় ১৭০টি। সেখানে চিনের কাছে রয়েছে প্রায় ৬০০টি নিউক্লিয়ার ওয়ারহেড। তার মধ্যে আবার ২৪টি বিভিন্ন সামরিক ঘাঁটিতে ইতিমধ্যেই মোতায়েন করে রেখেছে চিন।
রিপোর্টে দাবি, ২০২৪ সালে পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডার আগের থেকে আরও বাড়িয়েছে ভারত। শুধু তাই নয়, আগের তুলনায় আধুনিক ও উন্নত মানের পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডার গড়ে তুলছে ভারত। সেই অর্থে খানিক পিছিয়েই রয়েছে পাকিস্তান। তবে, বাকিদের সঙ্গে পাল্লা দিতে প্রতিযোগিতায় তারাও নেমে পড়েছে বলে দাবি করা হয়েছে ওই রিপোর্টে।
সিপরির রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, বিশ্বের মোট পরমাণু অস্ত্রের সংখ্যা এখন প্রায় ১২ হাজার ২৪১। এর মধ্যে ৯ হাজার ৬১৪টি সক্রিয় অবস্থায় আছে। অর্থাৎ তা প্রয়োজনে ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত। তার মধ্যে আবার ৩ হাজার ৯১২টি সরাসরি যুদ্ধবিমানে মোতায়েন করা হয়েছে। যার মধ্যে ২১০০টিই রয়েছে আমেরিকা ও রাশিয়ার কাছে। পরমাণু অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তির তোয়াক্কা না করেই প্রতিযোগিতায় মেতে রয়েছে দেশগুলি।
২০০০ সাল পর্যন্ত কেবল ফ্রান্স, রাশিয়া, ব্রিটেন ও আমেরিকা ‘মাল্টিপল ওয়ারহেডে’ মিসাইল রাখত। তবে গত দু’দশকে এশিয়ার দেশগুলির মধ্যে সেই প্রবণতা বেড়েছে। চিন, ভারত, পাকিস্তান ও উত্তর কোরিয়াও বর্তমানে সেই রাস্তায় হেঁটেছে। এমন কি, ইউরোপ ও পশ্চিম এশিয়ার কয়েকটি দেশে নতুন করে পরমাণু অস্ত্র তৈরি বা মজুতের আলোচনা শুরু হয়েছে বলেও দাবি করা হয়েছে ওই রিপোর্টে।