ইজরায়েলের লাগাতার হামলার মধ্যেই ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল ইরান।শুক্রবার, ২০ জুন, স্থানীয় সময় রাত ৯টা ১৯ মিনিটে ইরানের উত্তরাঞ্চলের সেমনান এলাকায় ৫.১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে।মাত্র পাঁচ দিন আগেই ফোর্দো অঞ্চলের কাছে ২.৫ মাত্রার একটি ভূমিকম্প রেকর্ড করা হয়, যা ইসরায়েলি হামলার পরপরই ঘটে। শুক্রবারের ভূমিকম্পটির উৎস সেমনান শহর থেকে প্রায় ৩৬ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, ভূপৃষ্ঠ থেকে ১০ কিলোমিটার গভীরে। এর কম্পন তেহরানসহ আশপাশের এলাকাতেও অনুভূত হয়েছে। তবে কী তেহরান পারমাণবিক অস্ত্রের গোপন পরীক্ষা সেরে ফেলল? ভূমিকম্পের খবর চাউর হতেই তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আইআরএনএ জানিয়েছে, ভূমিকম্পে কোনও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি এবং ক্ষয়ক্ষতিও হয়েছে ‘অত্যন্ত সামান্য’। ইরান এমনিতেই ভূকম্পপ্রবণ দেশ। এটি আলপাইন-হিমালয়ান ভূকম্পীয় বেল্টে অবস্থিত, যা আরবীয় ও ইউরেশীয় টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থল। প্রতিবছর ইরানে গড়ে প্রায় ২,১০০ ভূমিকম্প হয়, যার মধ্যে ১৫ থেকে ১৬টি ভূমিকম্পের মাত্রা হয় ৫.০ বা তার বেশি।তথ্য বলছে ২০০৬ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে ইরানে মোট ৯৬,০০০টি ভূমিকম্প হয়েছে।
কম্পন নিয়ে জল্পনার বড় কারণ শুক্রবারের ভূমিকম্প হয়েছে সেমনান স্পেস সেন্টার এবং সেমনান মিসাইল কমপ্লেক্সের কাছাকাছি এলাকায়। এখানেই ইরানের সামরিক বাহিনীর মহাকাশ ও ক্ষেপণাস্ত্র কার্যক্রম পরিচালিত হয়। পারমাণবিক বোমার পরীক্ষায় কী এতবড় ভূমিকম্প হতে পারে? বিশেষজ্ঞদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ভূগর্ভস্থ পারমাণবিক বিস্ফোরণ, বিস্ফোরণস্থলের আশপাশের টেকটোনিক চাপ মুক্ত করে ভূমিকম্পের সৃষ্টি করতে পারে। ইউনাইটেড স্টেটস জিওলজিকাল সার্ভে জানিয়েছে, এ ধরনের বিস্ফোরণের ফলে ভূকম্পন হলেও সেগুলোর মাত্রা সাধারণত বিস্ফোরণের শক্তির তুলনায় অনেক কম হয়। পাশাপাশি এই কম্পন বিস্ফোরণস্থল থেকে কয়েক দশ কিলোমিটারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে।এবং এর আফটারশকের সংখ্যা খুবই কম দেখা যায়।
তবে এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী ইউনাইটেড স্টেটস জিওলজিকাল সার্ভের বিশেষজ্ঞদের বিশ্লেষণে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে শুক্রবারের ভূমিকম্প সম্পূর্ণ স্বাভাবিক প্রাকৃতিক ঘটনা এবং এর সঙ্গে কোনও পারমাণবিক পরীক্ষা বা সামরিক বিস্ফোরণের যোগ মেলে নি।
Leave a comment
Leave a comment