পহেলগামে জঙ্গি হামলার ঘটনার পর দু’মাস কেটে গেল। এখনও ধর্ম জিজ্ঞেস করে পর্যটকদের গুলি মারা সন্ত্রাসবাদীদের একজনকেও ধরতে পারেনি এনআইএ। যদিও ইতিমধ্যেই তিন জঙ্গিকে আশ্রয় দেওয়ার অপরাধে দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে তারা। এ বার তদন্তকারীদের দাবি, পহেলগামের জঙ্গিরা পুঞ্চের ‘দেহরে কি গলি’ (ডিকেজি) পাকিস্তান থেকে ভারতে অনুপ্রবেশ করেছিল। ২০২২ সালের শেষ দিকে বা ২০২৩ সালের প্রথম দিক থেকেই জম্মু ও কাশ্মীরে সক্রিয় আনাগোনা ছিল জঙ্গিদের।
এক বছরেরও বেশি সময় ধরে জম্মুতে সক্রিয় ছিল পহেলগামের নেপথ্যে থাকা জঙ্গিরা। ভারতীয় সেনাকে টার্গেট করে কমপক্ষে তিনটি বড় হামলা চালিয়েছিল তারা। ২০২৪ সালের দ্বিতীয়ার্ধ থেকে কাশ্মীরের দিকে পা বাড়াতে শুরু করে তারা। ওই জঙ্গিরা প্রথম হামলা চালিয়েছিল গত ২০২৩ সালের ২১ ডিসেম্বর। পুঞ্চের সুরানকোটে বুলফিয়াজ এলাকায় দেরা কি গলি এলাকায় চার ভারতীয় জওয়ানকে খুন করে জঙ্গিরা।
এর পর ২০২৪ সালের মে মাসে সেই সুরানকোটেই সানাইয়ের বাকরাবাল মোহল্লায় বায়ুসেনার কনভয়ে হামলা চালায় ওই জঙ্গিরা। এরপর পুঞ্চের গভীর জঙ্গলে ও পাহাড়ি এলাকায় জোরদার তল্লাশি চালানো সত্ত্বেও জঙ্গিদের টিকিটিরও হদিশ মেলেনি। গোয়েন্দাদের দাবি, ২০২৪ সালের অগাস্ট সেপ্টেম্বর মাস নাগাজ ওই জঙ্গিরা বুলফিয়াজ এলাকা হয়ে কাশ্মীরে স্থান বদল করেছিল।
কাশ্মীরে পৌঁছে ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে গিয়েছিল জঙ্গিরা। একপক্ষ গুলমার্গ ও অপরপক্ষ সোনমার্গের দিকে পা বাড়াতে থাকে। গত বছরেরই অক্টোবরের ২০ তারিখ সোনমার্গে বেশকিছু শ্রমিকের উপর গুলি চালায় স্থানীয় জুনেদ নামে এক জঙ্গি। পাকিস্তানের জঙ্গিদের সাহায্য নিয়েছিল সে। ঠিক তার ৬ দিন পর গুলমার্গে সেনাবাহিনীর ট্রাকে হামলা চালায় জঙ্গিরা।
গোয়েন্দাদের আরও দাবি, পহেলগাম হামলার পরিকল্পনার আগে জঙ্গিদের ওই দুটি আলাদা দল একজোট হয়েছিল। হাপাতনর, ত্রাল ও দামাল হাজিপোড়া এলাকা থেকে জঙ্গিদের গতিবিধির খবর পেয়েছিলেন গোয়েন্দারা। কিন্তু সেদিকে নজর দিতে গিয়ে জঙ্গলে ঘেরা এলাকাগুলিতে তল্লাশি শিথিল হয়ে গিয়েছিল। জঙ্গিরা ঠিক এটাই চেয়েছিল। আর সেই সুযোগেই সবুজে ঘেরা বৈসরন উপত্যকায় পর্যটকদের উপর জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটে।