যাঁর সঙ্গে ঘর বাধবেন ভেবেছিলেন, তিনি হাত ধরেছেন অন্য কারও। তবে সেই বিশ্বাসঘাতকতার বদলা যে এভাবেও নেওয়া যায়, তা জেনে অবাক পুলিশ। সেই ব্যক্তিকে ফাঁসাতেই এক অদ্ভুত কর্মকাণ্ড চালিয়েছেন চেন্নাইয়ের এমএনসি কর্মী রেনে জোশিলদা। ইতিমধ্যেই তাঁকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে বিস্ফোরণের হুঁশিয়ারি দেওয়া হচ্ছিল বারবার। সেই ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ দেখে, ১২ টি রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে দেওয়া হচ্ছিল হুমকি। এরপরেই সামনে আসে আসল বিষয়টি।
গত শনিবার চেন্নাইয়ের বাড়ি থেকে রেনে জোশিলদা নামে এক মহিলাকে গ্রেফতার করা হয়। জয়েন্ট সিপি শরদ সিঙ্ঘল জানিয়েছেন, একাধিক ভুয়ো ইমেল আইডি তৈরি করেছিলেন জোশিলদা।এর মধ্যে রয়েছে দিভিস প্রভাকরের নামেও একাধিক আইডি। পুলিশের দাবি, এই দিভিস প্রভাকরকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন জোশিলদা।
রোবটিক্সে ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করেছেন জোশিলদা। ২০২২ সাল থেকে চেন্নাইয়ের একটি সংস্থায় সিনিয়র পদে কর্মরত ছিলেন। দিভিসকে অনেক দিন ধরে পছন্দ করতেন। এমনকী বিয়ে করারও প্রস্তাব দেন। কিন্তু এই ইচ্ছা সম্পূর্ণ ভাবে ছিল তাঁর একারই। দিভিসের কাছ থেকে এই বিষয়ে কোনও সাড়া পাননি। স্বপ্ন পুরোপুরি ভেঙে যায় গত ফেব্রুয়ারি মাসে। যখন দিভিস বিয়ে করেন অন্য এক মহিলাকে। এরপর থেকেই প্রতিশোধ নেওয়ার কথা ভাবেন জোশিলদা।
পুলিশ সূত্রে খবর, এরপরেই প্রভাকরের নামে একের পর এক ইমেল তৈরি করেন। সেখান থেকে একের পর এক হুমকি মেল পাঠাতে শুরু করেন। কখনও নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়াম আবার কখনও বিজে মেডিক্যাল কলেজ, এমনকী স্কুল উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি প্রভাকরের নাম ব্যবহার করে পাঠাতে শুরু করে ধৃত মহিলা। নিজের প্রযুক্তিগত শিক্ষা প্রয়োগ করে আলাদা আলাদা জায়গার নামে আইডি তৈরিও করা হয়।
একাধিক রাজ্যের পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছিল। তদন্তে দেখা যায়, ফেক আইডি শুধু নয়, ভার্চুয়াল নম্বর, এমনকী ডার্কওয়েবেরও সাহায্য ওই মহিলা নিয়েছিলেন বলেও দাবি পুলিশের। প্রযুক্তিকে এমনভাবে জোশিলদা ব্যবহার করেছিলেন, তাঁকে ধরা পুলিশের সাধ্যের বাইরে ছিল কার্যত। পুলিশের শীর্ষ আধিকারিকরা জানিয়েছেন, সব ক্রাইমেই কোনও না কোনও ভুল অপরাধী রেখে যায়। এক্ষেত্রে তেমনটা ছিল। পুলিশের কথায়, একটা ছোট্ট ভুল এক্ষেত্রে জোশিলদাকে ধরিয়ে দেয়।