ভরা হাসপাতালের মধ্যে যুবতীকে গলা কেটে খুন! ঘটনাটি ঘটেছে মধ্যপ্রদেশের নরসিংহপুর জেলা হাসপাতালে। গত ২৭ জুন, দুপুর ২টা নাগাদ সরকারি হাসপাতালের মধ্যেই ১৯ বছর বয়সী এক তরুণীকে গলায় ছুরি চালিয়ে হত্যা করেন এক যুবক। দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রীর নাম সন্ধ্যা চৌধুরী! অভিযুক্ত অভিষেক কোষ্টি যখন তরুণীকে খুন করেন, সেই দৃশ্য দেখেও কেউ এগিয়ে আসেননি বাঁচাতে।
সোমবার সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিয়ো ফুটেজে দেখা যায়, কালো জামা পরা অভিষেক প্রথমে সন্ধ্যাকে চড় মারেন। তার পর মাটিতে ফেলে দিয়ে সন্ধ্যার বুকের ওপর চেপে বসে ছুরি দিয়ে গলা কেটে ফেলেন অভিযুক্ত। এমন নারকীয় হত্যাকাণ্ড ঘটেছে ওই সরকারি হাসপাতালের ট্রমা সেন্টারের ঠিক সামনে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ডাক্তার, নার্স, ওয়ার্ড বয় এবং নিরাপত্তারক্ষীরা। কিন্তু কেউ একবারের জন্যও তরুণীকে বাঁচাতে আসেননি। অনেকেই দাঁড়িয়ে এই দৃশ্য দেখেন, আবার কেউ পাশ কাটিয়ে চলে যান।
পুরো ঘটনাটি ঘটে দিনের আলোয়, হাসপাতালের জরুরি বিভাগের একেবারে ভেতরে। অভিযুক্ত নিজেকেও আঘাত করতে চেষ্টা করেন, কিন্তু ব্যর্থ হন। তার পর বাইক নিয়ে সেখান থেকে পালিয়ে যান। হাসপাতাল সূত্রে খবর, ঘটনার সময় ট্রমা সেন্টারের বাইরে দু’জন নিরাপত্তারক্ষী ছিলেন এবং ভেতরে চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। এত জন থাকা সত্ত্বেও কেউ হামলাকারীকে থামাতে বা বাধা দিতে আসেননি।
এই ঘটনার পর হাসপাতাল জুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ট্রমা ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা ১১ জন রোগীর মধ্যে ৮ জন সে দিনই হাসপাতাল ছেড়ে চলে যান। পর দিন সকালেই ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি ফিরে যান বাকিরাও। মৃতের পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দুপুর ২টা নাগাদ বন্ধুর ভাইয়ের স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে হাসপাতালে যান তরুণী। ওই দিন দুপুর থেকেই হাসপাতাল চত্বরে ঘোরাঘুরি করছিলেন অভিষেক। সন্ধ্যা হাসপাতালে পৌঁছতেই নৃশংস ভাবে তাঁকে খুব করেন অভিষেক।
মেয়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে সন্ধ্যার পরিবার হাসপাতালে পৌঁছায়। তখনও তরুণীর দেহ হাসপাতালে মেঝেতেই পড়ে ছিল। ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে হাসপাতালের সামনে রাস্তা অবরোধ করে মেয়েটির পরিবার ও স্থানীয়রা। রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত চলে অবরোধ! তার পরেও উত্তেজনা ছড়ায়। রাত ২টো নাগাদ প্রশাসনের আশ্বাসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।